বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানিয়েছেন, এবারের পরের রমজানে মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা করে দাম নির্ধারণ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘ইউএইতে (সংযুক্ত আরব আমিরাত) দেখলাম, ১৮টি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম নিয়ে রাষ্ট্রীয় বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এই পণ্যগুলোর দাম কেউ রমজান মাসে বাড়াতে পারবে না।’
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা এবার হয়তো পারিনি। আমাদের সাপ্লাই চেইনের উন্নতি করে আগামীতে কেবিনেটের অনুমোদন নিয়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের একটা সম্পূর্ণ তারিকা তৈরি করব, ওইভাবে এটার সাপ্লাই বাড়ানো এবং পণ্যের নির্ধারিত দাম আমরা যাতে ঠিক করতে পারি।’
রবিবার (১০ মার্চ) সচিবালয়ে কৃষি পণ্য সরবরাহে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এবং রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘প্রোডিনটর্গ’র সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারের চেষ্টা সত্ত্বেও বাজারে প্রভাব না পড়ার কারণ জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই যারা রোজার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানি ও উৎপাদন করেন তাদের সঙ্গে বসেছি। আমদানি ও উৎপাদন পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে, এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তেলের দামও আমরা নির্ধারণ করে দিয়েছি। রমজান উপলক্ষে আজকে থেকে বাজার তদারকি আরও বাড়াব। যাতে কেউ সয়াবিনের পেট বোতল প্রতি লিটার ১৬৩ টাকা, খোলা তেল প্রতি লিটার ১৪৯ টাকার উপরে কেউ বিক্রি না করে। সেই ব্যাপারে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নেব।’
আহসানুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিন্তু নির্দেশ দিয়েছেন, বাজারে সরবরাহ চেইনে কেউ যদি ব্যাঘাত ঘটায় তাহলে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। একেবারে যে উন্নতি হয়নি তা নয়। ভারত থেকে পেঁয়াজ আনার জন্য তাদের সম্মতি আমরা পেয়েছি। দুই থেকে একদিনের মধ্যে পেঁয়াজও বাংলাদেশে ঢুকবে। একেবারে খুচরা পর্যায়ে কাঁচাবাজারগুলো অস্থায়ীভাবে থাকে, ওইগুলো আমরা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করব সেটা এখন বের করতে হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রথমে আমাদের উদ্দেশ্য ছিল একটাই- সরবরাহ নিশ্চিত করা, কোনোভাবেই যেন সরবরাহে ঘাটতি না হয়।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি পরিবারকে যে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দেওয়া হয় এটা সম্পূর্ণ শুরু হলে এতেও বাজারে একটা চাপ কমে যাবে।’
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের একটু সততার সঙ্গে ব্যবসাটা করতে হবে। ধর্মীয় অনুভূতিটাকে প্রাধান্য দিয়ে যাতে আমরা ব্যবসাটা করি।
রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এখন চালের স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও গম, ভুট্টা, ডালের ক্ষেত্রে শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারিনি। এগুলো আমাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে আনতে হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গমের উৎস হলো রাশিয়া।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকে যে প্রোডাক্টগুলো তারা সাইন করল। রাশিয়ান ফেডারেশন থেকে তারা যদি সাপোর্ট দিতে পারে তাহলে আমাদের ফুড সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটির একটা বড় বাফার স্টক আমরা তৈরি করতে পারব।
টিসিবিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এখন টিসিবির মাধ্যমে এক কোটি পরিবারকে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পরবর্তীতে ফেয়ারপ্রাইজে মাল্টিপল প্রোডাক্ট সরবরাহ করব, যদি আমাদের এই রকম সোর্স থাকে।
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, শুধু রাশিয়া থেকে নয় কয়েকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আনতে আমরা ভারতের সঙ্গেও একটি চুক্তি করার জন্য সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করছি। মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি