April 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, May 15th, 2022, 9:02 pm

আগাম আম পেড়ে বিপাকে সাতক্ষীরার চাষিরা

সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় অশনি’র প্রভাবে আম চাষিরা আগে ভাগে গাছ থেকে আম পেড়ে ফেলায় সাতক্ষীরার পাইকারি বাজারে অপরিপক্ক আমের সয়লাব হয়েছে।

চাষি ও ব্যবসায়ীদের মতে, বিশ্বে সাতক্ষীরার আমের সুনাম রয়েছে। আবহাওয়া আর মাটির গুনাগুনের কারণে দেশের অন্য জেলার তুলনায় সাতক্ষীরার আম আগে ভাগেই পাকে। তবে এ বছর ঘূর্ণিঝড় অশনি থেকে বাঁচাতে কৃষকরা ইতোমধ্যে হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ এবং বোম্বেসহ অনেক জাতের আম পেড়ে ফেলেছেন।

সদর উপজেলার কুকরালী গ্রামের আম চাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ বছর ১৮ বিঘা জমিতে আম চাষ করেছি। মুকুল আসার আগে থেকেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে আম উৎপাদন কম হয়েছে।

তার দাবি, ঘূর্নিঝড় আশনি’র আঘাত হানার খবর শুনে আম চাষিরা অপুষ্টি আম আগে ভাগে পেড়ে ফেলেছে। মৌসুম শুরুর আগেই বাজারে অপুষ্টি আমে সয়লাব। ফলে আমের চাহিদা কম এবং আমেরও ন্যায্য দাম পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজ্জাক বলেন, গত বছর যে আম ২৮’শ টাকা মণে (৪০ কেজি) বিক্রি হয়েছে সেই আম চলতি বছর সর্বোচ্চ ১৬ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে না।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় চার হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। আর এবছর লক্ষ্য মাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন।

এদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাষিদেরকে চলতি মাসের ৫ তারিখে গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ, ১৬ মে থেকে হিমসাগর এবং মে মাসের শেষের দিকে নেংড়া আম পাড়ার জন্য আদেশ দিয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই বিপুল পরিমাণ হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম পেড়ে ফেলেছেন চাষিরা।

সুলতানপুর বড়ো বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবু জানান,পাইকারি বাজারে চাষিরা নানা জাতের আম নিয়ে আসেন। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ায় জেলায় আমের উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় কম বলেও জানান তিনি।

ক্রেতাদের অভিযোগ, চাষিরা ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে কৃত্রিমভাবে আম পাকিয়ে অপরিপক্ক আম জেলার বৃহত্তম পাইকারি বাজার সুলতানপুর বোড়ো বাজারসহ বাজারে নিয়ে এসেছেন। এসব আম রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পাঠানো হচ্ছে।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা.কল্যাণশিস বলেন, যেসব কেমিকেল দিয়ে অপুষ্টি আম পাকানো হচ্ছে তা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। লিবার, কিডনি, পাকস্তলি, এমনকি ক্যানন্সারের জীবানু বহন করে এসব ক্যামিকেল। ফলে আম বা এ জাতীয় ফল খাওয়ার আগে মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে।

কৃত্রিমভাবে পাকা আম খাওয়ার আগে জনগণকে সচেতন হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ক্যামিকেলযুক্ত অপুষ্টি আম যাতে বাজারে না ওঠে সে ব্যাপারে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।

—ইউএনবি