মো: মছব্বির আলী, মৌলভীবাজার:
জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর স্নেহধন্য, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের প্রাক্তণ (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি, কুলাউড়ার সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামীলীগের আজীবন সাধারণ সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মরহুম আব্দুল জব্বার এর ৩১ তম মৃত্যুবার্র্ষিকী আজ ২৮ আগস্ট ।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এবং একুশে পদক এ ভূষিত মরহুম আব্দুল জব্বারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ শাহাউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে উল্লেখ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল জব্বারের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যাঁরা আজীবন বাংলার গণমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেছেন, প্রয়াত নেতা আব্দুল জব্বআর তাঁদের অন্যতম। মরহুম আব্দুল জব্বার একজন অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান ও অনন্য় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ এর ছয়-দফা, ১৯৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান, ১৯৭০-এর নির্বাচন, ১৯৭১- এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সহ সকল গনতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহান আল্লাহর দরবারে মরহুম আব্দুল জব্বারের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে উল্লেখ করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য, প্রাক্তণ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) বাংলাদেশ কৃষকলীগ, সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য মরহুম আব্দুল জব্বারের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের ১৮ জন সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যার পর আব্দুল জব্বার ১৭ আগস্ট কুলাউড়া শহরে প্রতিবাদ সভা, বিক্ষোভ মিছিল ও গায়েবানা জানাজা আয়োজন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে গ্রেফতার হতে হয় এবং বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুনি মেজর নূর রাতভর অমানুষিক নির্যাতন করে, ভোর রাতে হত্যার জন্য ব্রাশ ফাঁয়ার করতে গেলে তৎকালীন সেনা অফিসার আমিন আহমেদ চৌধুরী তাকে উদ্ধার করেন এবং তিনি প্রাণে বেঁচে যান। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় রাজনৈতিক কর্মকান্ড শুরু করলে আবারও গ্রেফতার হন এবং কারাবরণ ও নির্যাতনের শিকার হন।
একুশে পদক এ ভূষিত, মরহুম আব্দুল জব্বার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, আইনের শাসন, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে প্রতিবাদে স্বোচ্ছার থেকেছেন সবসময়। মাটি ও মানুষের সাথে ছিল তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। মরহুম আব্দুল জব্বারের ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞা, সততা ও দেশপ্রেম সকলকে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর সততা ও জীবনাদর্শ তরুণ রাজনীতিবিদদের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহান আল্লাহর দরবারে মরহুম আব্দুল জব্বারের পবিত্র রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
সোমবার এ উপলক্ষে পারিবারিকভাবে নানা কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রয়াত মরহুম আব্দুল জব্বারের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল উল্লেখযোগ্য। দোয়া মাহফিলে সকলের উপস্থিতি কামনা করেছেন মরহুমের ছেলে প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ ও আব্দুল জব্বার ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো: আবু জাফর রাজু ও কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ স ম কামরুল ইসলাম। তারা উভয়েই জানান, আমরা সর্বস্তরের মানুষের কাছে আমাদের বাবার জন্য দোয়া চাই। বাবার মতো আমরাও যেন আপনাদের পাশে থেকে সারাজীবন কল্যাণকর কাজ করে যেতে পারি।
উল্লেখ্য, সাবেক এমপি মরহুম আব্দুল জব্বার ১৯৯২ সালের ২৮ আগস্ট শোকের মাসে মাত্র ৪৭ (১৯৪৫-১৯৯২) বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি