অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদারের ভাই পৃথ্বীশ কুমার হালদারকে এবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে পলাতক দাবি করলো ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর (ইডি)। ইডির পক্ষে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) আদালতে জানানো হয়- অর্থ তছরুপের অভিযোগে পৃথ্বীশ কুমার হালদারকে প্রথম দিন থেকে খোঁজা হচ্ছে। ইডির আইনজীবী জানান, সেক্ষেত্রে পৃথ্বীশের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। জারি হতে পারে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। দুদকের সূত্রে পাওয়া শেষ তথ্য মতে, তছরুপে অভিযুক্ত হওয়ার পরই বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে কানাডায় গেছেন পৃথ্বীশ। ৪১ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজত শেষে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বাংলাদেশের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারসহ মোট ছয়জনকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে তোলা হয়। উভয়পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে স্পেশাল সিবিআই কোর্ট-৩ এর বিচারক শুভেন্দু সাহা তাদের আগামী ১৬ মে ফের আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেন। সেই সাথে মামলার তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তরফে অভিযুক্তদের হাতে যে নথি তুলে দেওয়া হয়েছে, তা যাচাই করে আগামী ১৭ এপ্রিল আদালতের কাছে রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এদিন ইডি’র আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন এই মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ও হালট্রিপ কোম্পানির অন্যতম ডিরেক্টর পৃথ্বীশ কুমার হালদার ও প্রেয়সী সাহা পলাতক। প্রথম দিন থেকেই তাদের খোঁজা হচ্ছে। পৃথ্বীশ হালদার ও প্রেয়সী সাহাকে না পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে। নতুন করে কোনো অভিযুক্তের জামিনের আবেদন করা হয়নি বলেও জানান ইডির আইনজীবী। গত ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। ‘অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২’ এবং দুর্নীতি দমন আইন-১৯৮৮ মামলায় ওই ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জ গঠন করা হয়। বর্তমানে অভিযুক্ত পিকে হালদা সহ পাঁচ অভিযুক্ত রয়েছে প্রেসিডেন্সি কারাগারে। আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদার রয়েছে আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট ও বিদেশে পাচার করে পালিয়ে যাওয়া প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারকে গত বছরের মে মাসে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অশোকনগর থেকে গ্রেপ্তার করে। গোয়েন্দা সংস্থাটি জানায়, পিকে হালদার সে দেশে শিবশঙ্কর হালদার নাম ধারণ করেছিলেন। এই নামে তিনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে রেশন কার্ড করে নেন। এমনকি ভারতীয় ভোটার কার্ড, প্যান ও আঁধার কার্ডের মতো বিভিন্ন সরকারি পরিচয় জালিয়াতি করে তিনি নিজেকে শিবশঙ্কর হালদার বানিয়ে নেন। এ ছাড়া তিনি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে জাহির করছিলেন। একই অবস্থা ছিল তার সহযোগীদেরও, যাদের তার সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে ভারতে এ অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে চারজন বাংলাদেশি। তারা হলেন, প্রীতিশ কুমার হালদার ও তার স্ত্রী (নাম জানা যায়নি), উত্তম মিত্র ও স্বপন মিত্র। এ ছাড়া প্রণব হালদার নামে এক ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে ইডি। প্রণব সেখানে সরকারি চাকরি করেন। পরে সঞ্জীব হালাদার নামে একজনকে আটক করার কথা জানায় ইডি। শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। সঞ্জীব বাংলাদেশ গ্রেপ্তার সুকুমার মৃধার জামাই। একই অভিযানে সন্ধান পাওয়া যায় পিকে হালদারের বিপুল সম্পদেরও। ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট পশ্চিমবঙ্গে তার কয়েকটি অভিজাত বাড়িসহ বিপুল সম্পত্তির কথা জানিয়েছে। বাড়িগুলো থেকে জমির দলিলসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথি জব্দ করা হয়। শুধু পশ্চিমবঙ্গে পিকে হালদারের ২০ থেকে ২২টি বাড়ি আছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২