অনলাইন ডেস্ক :
পাকিস্তানকে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। গত রোববার ওআইসি সম্মেলনে ইমরান খানের দেওয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট। তিনি পাকিস্তান সরকারকে আন্তর্জাতিক মহলে আফগানিস্তান বিষয়ে কথা বলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। গত রোববার ওআইসি সম্মেলনে ইমরান খান দাবি করেন, আফগানিস্তান সীমান্ত থেকে পাকিস্তানে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। তিনি বলেন, ‘আমরা আফগান সীমান্ত থেকে আইএসআইএল দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছি।’ হামিদ কারজাই পাল্টা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইমরান খানের এ দাবি সত্য নয়। শুরু থেকেই পাকিস্তান থেকে জঙ্গিগোষ্ঠীর হামলার শিকার হয়ে আসছে আফগানিস্তান। কারজাই বলেন, ‘ইমরান খানের মন্তব্য সত্য নয়, এটি আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার। প্রকৃতপক্ষে, শুরু থেকেই আফগানিস্তান পাকিস্তানের তরফ থেকে আসা দায়েশের হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।’ ওআইসিতে দেওয়া বক্তব্যে ইমরান খান আরও বলেন, আফগান সরকারের বছরের পর বছর দুর্নীতির কারণে প্রাক্তন সরকারের পতনের আগেও আফগানিস্তানে ব্যাপক দারিদ্র্য ছিল। ইমরান খান বলেন, ‘বছরের পর বছর দুর্নীতি, বাজেটের ৭৫ শতাংশ বৈদেশিক সাহায্য নেওয়ার কারণে ১৫ আগস্টের আগেও আফগানিস্তানের অর্ধেক জনসংখ্যা দারিদ্রসীমার নিচে বাস করত। এমন পরিস্থিতিতে থাকা একটি দেশে ১৫ আগস্টের পর যদি হঠাৎ বৈদেশিক সাহায্য বন্ধ হয়ে যায়, বিদেশি তহবিলগুলো স্থগিত হয়ে পড়ে, ব্যাংকিং ব্যবস্থা স্থবির হয়ে যায় তাহলে শুধু আফগানিস্তান নয়, যে কোনো দেশই ভেঙে পড়তে বাধ্য।’ আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার আগে সেদেশে মানবাধিকার সম্পর্কিত কয়েকটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এর সমালোচনা করে ইমরান খান বলেন, একটি দেশে নতুন মূল্যবোধ প্রচারের আগে সে দেশের বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্যগুলো বুঝতে হবে। তার বক্তব্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামের সংস্কৃতি শহরের সংস্কৃতি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কাবুল সংস্কৃতি গ্রামের সংস্কৃতি থেকে সবসময়ই আলাদা ছিল। যেমন পেশোয়ারের সংস্কৃতি অন্য এলাকার চেয়ে আলাদা।’ ইমরান খানের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন হামিদ কারজাই। বিশেষত আফগানিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে দুর্নীতি বিষয়ে দেওয়া ইমরান খানের বক্তব্যের সমালোচনা করে কারজাই বলেন, ‘পাকিস্তান সরকারকে আফগানিস্তানের বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সমাবেশে আফগানিস্তানের পক্ষে কথা বলাও বন্ধ করতে হবে।’ কারজাই বলেন, ‘ইমরান খানের দেওয়া এ ধরনের বক্তব্য আফগানিস্তানের জনগণকে অপমান করেছে।’ পাকিস্তান সরকারের সমালোচনা করে সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যেকোনো সরকার যদি তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে না পারে, তাহলে সেই সরকারেরও পতন হতে পারে।’
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু