পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সীমান্ত হত্যা খুবই দুঃখজনক এবং প্রাণহানির কারণ হতে পারে, সীমান্ত বাহিনী এমন কোনো শক্তি যাতে প্রয়োগ করতে না পারে- তা নিশ্চিত করতে আমরা নিয়মিত ভারতের সঙ্গে আলোচনা করছি।
বুধবার (৮ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে। আমরা দুই দেশ কাজ করছি যাতে এটা না হয়। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। আমরা নিয়মিত আলোচনা করছি।’
সাম্প্রতিক সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার কাছে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টাকালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা বাংলাদেশে এলে সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী এবং ভারতের সঙ্গে তাদের অনেক সমস্যা রয়েছে। ‘স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।’
দুই দেশের মধ্যে ‘উচ্চ পর্যায়ের মতবিনিময়ের’ অংশ হিসেবে আজ রাতে (বুধবার) ঢাকায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে কোয়াত্রার।
বৃহস্পতিবার তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তার সংক্ষিপ্ত সফরে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবির সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে।
একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকায় ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের সফরকালে প্রস্তুতিমূলক বিষয়গুলো আলোচনায় আসতে পারে।
সফরের বিষয়ে ঢাকা ও নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না থাকলেও গত ২০ এপ্রিল ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের সংক্ষিপ্ত সফরে ঢাকায় আসার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়।
সফর স্থগিতের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, ওখানে (ভারতে) নির্বাচন চলছে। ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ নানা কারণে সফর স্থগিত করা হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, প্রতিবেশী দেশটির নির্বাচন শেষ হওয়ার পর জুলাইয়ের শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
প্রাথমিক নির্বাচনী জরিপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন জোট জয়ী হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে, আশা করা হচ্ছে তিনি পুনরায় নির্বাচিত হবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) ভারত সফর অবশ্যই হবে। তবে এটি ভারতের নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, সফরটি ঠিক কবে হবে, তা নিয়ে সরকারি পর্যায়ে এখনও আলোচনা হয়নি।
জানুয়ারিতে নির্বাচনে জয়লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এসময় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অব্যাহত জোরদার করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছিল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জি-২০ শীর্ষ নেতাদের সম্মেলনে। এতে বাংলাদেশ অতিথি দেশ হিসেবে অংশ নেয়।
প্রধানমন্ত্রী মোদী শপথ অনুষ্ঠানে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করার জন্য দক্ষিণ এশীয় এবং বিমসটেক দেশের নেতাদের আমন্ত্রণ জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মার্চ মাসে ভারত সরকার কোয়াত্রার মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়েছে।
কোয়াত্রা ২০২২ সালের ১ মে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে ১৯৮৮ সালে ভারতীয় পররাষ্ট্র পরিষেবায় যোগ দিয়েছেন।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
এলডিসি গ্রাজুয়েশনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু উত্তরণে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস জাতিসংঘের
জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে ইউনূস-আইসিসির আলোচনা
দেশ সংস্কারে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র