জেলা প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, আমি বলিনি যে শামীম ওসমানের সমর্থন আমার দরকার নেই। আমি বলেছি যে আমার ভোটাররা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে তারা কাকে ভোট দেবে। দল যখন আমাকে নমিনেশন দিয়েছে, আমার দলের লোকেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা নৌকার পক্ষেই থাকবে। এর মধ্যে দুয়েকজন ব্যতিক্রম হলে আলাদা ব্যাপার। ভোটারদের কাছে এটা অপরিহার্য নয় যে কে সমর্থন দিল কে দিল না। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা হয়তো এটায় গুরুত্ব দেবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ, আমার মা-বোনদের কাছে মাথাব্যথা নেই নারায়ণগঞ্জে কে সমর্থন দিল কে দিল না। তাদের কাছে বড় ব্যাপার দল নমিনেশন দিয়েছে। সোমবার (১০ জানুয়ারী) সকালে বন্দরের ২১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। আইভী বলেন, তিনি (তৈমূর) তো গডফাদারের কোলে গিয়ে বসে আছেন। তিনি গডফাদারের বাইরের কেউ না। গডমাদারটা তিনি যে আমাকে বলেছেন এটা খারাপ কাজ করেছেন। তাকে আমি এ ধরনের কথা বলিনি। তিনি তার কাছে আশ্রয় নিয়েছে এটাই বলেছি। তিনি যদি তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় না দাঁড়াতো তাহলে এ চেয়ারম্যানরা তার পাশে গিয়ে দাঁড়াতো না। অথবা পুলিশ কাকে হয়রানি করলো এটা তিনি বলতেন না। তার কর্মকা-ে ফুটে উঠেছে তিনি শামীম ওসমানের ক্যান্ডিডেট। তাদের প্রটেক্ট করতে গিয়ে যদি তিনি আমাকে এ ধরনের কথা বলেন পক্ষান্তরে তিনি নিজ সন্তানকেই বলছে। আমি তাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি। তাকে সম্মান করেই নির্বাচন চালিয়ে যাবো। এদিকে সোমবার (১০ জানুয়ারী) সকালে শহরের ২ নং রেলগেটস্থ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইভী বলেন, শামীম ওসমান কীসের পক্ষে প্রচারণা করবেন জানি না, আমার জানার প্রয়োজনও নেই। বিগত নির্বাচনগুলোর দিকে দেখলে দেখা যাবে, যতকিছুই হোক না কেন এখানে উৎসবমুখর পরিবেশেই নির্বাচন হয়, এবারও তাই হবে। আইভী আরও বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে তিনি (শামীম ওসমান) কেন গিয়েছেন, তা জানি না। তিনি সংবাদ সম্মেলনে কী বলবেন তাও জানি না। তার সমর্থন দেওয়া বা না দেওয়ায় খুব বেশি কি ডিফারেন্স হয়ে যাচ্ছে? গণমাধ্যম তাকে নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত। আমি ব্যস্ত আমার জনগণকে নিয়ে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের কাজগুলো সবসময়ই চলমান থাকে। তবে আমি বলতে পারি, নারায়ণগঞ্জবাসী আমাকে সবসময় তাদের কাছে পেয়েছে, যে কোনো কাজে। নগরবাসী আমাকে বেছে নেবে। কারণ, যখন এ শহরের মানুষ একদমই কথা বলতে পারতো না, ভয়ে ভীত থাকতো তখন জানি না অপর প্রার্থীরা কোথায় ছিলেন। আমি আমার বিগত ১৮ বছরে কোনো প্রার্থীকে এত সরব থাকতে দেখিনি। আমি ত্বকী হত্যাকা-ের মতো এত আলোচিত হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে তৈমূর আলম খন্দকারকে একটা সমাবেশ করতে দেখিনি। এ শহরে আশিক, বুলু, চঞ্চলকে হত্যা করা হয়েছে। দেখিনি কখনও একটি প্রতিবাদ করতে। সেলিনা হায়াৎ আইভী আরও বলেন, আজ তিনি (তৈমূর আলম) যাদের ক্যান্ডিডেট তাদের বিরুদ্ধে তিনি বলেছেন, তাকে নাকি গুলি করে বের করে দিয়েছে। সারাক্ষণই বলেছেন, আমাকে শামীম ওসমান গুলি করেছে, আমার অফিসে গিয়ে গুলি করেছে। আজকে তিনি কেন এসব কথা বলছেন! আমার বিরুদ্ধে তিনি অনেক কিছু বলছেন, যা ওনার বলা উচিত না। আমাকে না শুধু, আমার বাবাকেও তিনি চেনেন। গত রোববার প্রেস কনফারেন্সে তিনি যে অভিযোগ এনেছেন, সেগুলো সম্পূর্ণ বেমানান। গত দেড় বছর যাবত শামীম ওসমান এই গ্রাউন্ড তৈরি করেছেন আমার বিরুদ্ধে। শামীম ওসমান যে কথা বলেছেন, গত রোববার তিনি (তৈমূর আলম) তোতাপাখির মতো সেগুলোই বলেছেন। আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী বলেন, আমার ভোটার ফিক্সড, নারায়ণগঞ্জের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে কাকে ভোট দেবে। আমার জয় বড় ব্যবধানেই হবে। এখানে কেউ আমার ভোটারকে খুব বেশি প্রভাবিত করতে পারবে, তা মনে হয় না। কারণ নারায়ণগঞ্জের মানুষ খুব সচেতন। এই শহরের মানুষ প্রতিদিন যা দেখে নিজের চোখে তাই বিশ্বাস করে। সুতরাং আমি মনে করি আমার ভেটাররা তাদের জায়গাতেই থাকবে এবং নারায়ণগঞ্জে উৎসবমুখর পরিবেশেই নির্বাচন হবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি