জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
প্রধান শিক্ষিকা জেসমিন সুলতানা আমেরিকায় বসেই সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রায়গড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেছেন। প্রতিষ্ঠানটির নতুন কমিটি দায়িত্ব পাওয়ার পর জেলা শিক্ষা অফিসে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। বিদেশে থেকে শিক্ষিকরা চাকরি বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে সিলেটের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। গত মঙ্গলবার বিয়ানীবাজার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোমান মিয়া প্রতিষ্ঠানে এসে অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রশ্নে জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা রোমান মিয়া বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি সদস্যদের বক্তব্য শুনেছি। বিদ্যালয়ে উপস্থিতি শিক্ষকদের কাছ থেকে হাজিরা খাতা, অন্যান্য তথ্যগুলো দেখেছি। প্রতিষ্ঠানে উনাকে উপস্থিত পায়নি, যা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা। আমার কাছে আরও কিছু ডকুমেন্ট এসেছে আমি শিগগিরই তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে পাঠাবো। এ বিষয়ে উধ্বর্তন কতৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ রায়গড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জেসমিন সুলতানা। তিনি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের শারিরীক সমস্যা দেখিয়ে স্কুল থেকে তিন মাসের ছুটি নেন। এর থেকে তিনি ছুটিতে আছেন। স্থানীয়রা বলছেন, সপরিবারে আমেরিকায় আছেন। তার পর থেকে আমাদের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। শিক্ষা অফিস থেকে একাধিকবার এ ব্যাপারে কৈফিয়ত চেয়ে তার ঠিকানায় চিঠি পাঠালেও কেউ তা গ্রহণ করেননি। তার স্বজনরা বলছেন, তিনি ভিসা পেয়ে স্বামীসহ আমেরিকায় বসবাস করছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, তিন মাসের চিকিৎসা জনিত ছুটি নিয়েছেন প্রায় কয়েক বছর আগে। এখন কোথায় আছেন তিনি জানেন না। তিনি গত কয়েকমাস ধরে কোন সরকারি বেতন তুলেননি।
এ ব্যাপারে এ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকা নিয়তী রাণী চন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রধান শিক্ষিকার অনুপস্থিতির বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অনেক আগে জানানো হয়েছে। তাছাড়া উনি সোনালী ব্যাংকে আমাকে গ্রান্টার করে টাকা ঋণ উত্তোলণ করেছেন। এখন নিয়মিত কিস্তি না দেওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে চাপ সৃষ্টি করছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিজ খান বলেন, বিদ্যালয়ের সংরক্ষিত তথ্যমতে প্রধান শিক্ষিকা জেসমিন সুলতানা যোগদান করার পর থেকে মাঝে মধ্যে স্কুলে আসতেন। তিনি পাচঁ বছর ধরে লাপাত্তা। শুনেছি স্বপরিবারে আমেরিকায় আছেন। তবে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে দেশে এসে ব্যাংক থেকে সরকারি বেতন উত্তোলন করার সময় কয়েকদিন বিদ্যালয়ে এসেছিলেন। প্রধান শিক্ষিকার বিষয়টি সিলেট জেলা ও বিভাগীয় শিক্ষা কর্মকর্তাকে ই-মেইলে অভিযোগ করে জানিয়েছি।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি