নিজস্ব প্রতিবেদক:
রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টকে (আরজেএসসি) নিবন্ধিত বিপুলসংখ্যক কোম্পানিরই ট্যাক্স পেয়ার আইডেনটিফিকেশন নাম্বার (টিআইএন) নেই। বর্তমানে জন্টে স্টকে নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা এখন ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭টি হলেও এক লাখ ৯৯ হাজার ৩০টি কোম্পানির টিআইএন রয়েছে। তার মধ্যে পাবলিক ও প্রাইভেট লিমিটেডসহ অন্যান্য কোম্পানির সংখ্যা এক লাখ ৩৯ হাজার ৫০৫টির মধ্যে ৫৯ হাজার ৫২৫টি ফার্মের টিআইএন আছে। ওই হিসাবে নিয়মিত করের আওতায় রয়েছে ৭১ দশমিক ৫২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। আর এখনো করের আওতার বাইরে বাকি প্রায় ২৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। যদিও দেশের আইন অনুযায়ী নিবন্ধিত সব কোম্পানিরই বছর শেষে বার্ষিক আয় বিবরণী বা রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। কিন্তু টিআইএন থাকা অনেক কোম্পানিই নিয়মিত রিটার্ন দাখিল করে না। ফলে সরকার নিবন্ধিত কোম্পানিগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নিবন্ধিত যেসব প্রতিষ্ঠানের টিআইএন আছে তার মধ্যে বেশিরভাগই বার্ষিক আয় বিবরণী বা রিটার্ন দাখিল করে না। গত বছর মাত্র ৩১ হাজার কোম্পানি রিটার্ন দাখিল করেছে। ওই হিসাবে মাত্র ১৫ শতাংশ কোম্পানি রিটার্ন দাখিল করেছে। বাকি ৮৫ শতাংশ কোম্পানিই রিটার্ন দাখিল করেনি। আইন অনুযায়ী যে কোনো কোম্পানি খোলার ক্ষেত্রে কেবল পরিচালকদের ব্যক্তিগত টিআইএন দিতে হয়। কোম্পানি অনুমোদনের পর ওই কোম্পানির টিআইএন নিতে হয়। ওই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই কোম্পানি অনুমোদনের পর আর টিআইএন নিচ্ছে না কিংবা রিটার্ন জমা দিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে এনবিআর আরজেএসসির তালিকাভুক্ত সব কোম্পানিকে করের আওতায় আনার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, বিগত ২০২১ সালে রিটার্ন দাখিল করা নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান ছিল ২৮ হাজার। ২০২২ সালে ওই সংখ্যা ৩১ হাজারে উন্নীত হয়। মূলত আয়ের ওপর ভিত্তি করেই ব্যক্তি ও কোম্পানি উভয়ই সরকারকে কর দিয়ে থাকে। ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়সীমা থাকলেও কোম্পানির ক্ষেত্রে তা উল্লেখ নেই। কোম্পানি তার বার্ষিক মুনাফার ওপর প্রযোজ্য হারে কর পরিশোধ করে। দেশে কোম্পানি করদাতার সংখ্যা কম হলেও তারা ব্যক্তির চেয়ে বেশি কর দেয়। মোট করদাতার মাত্র ২ শতাংশ কোম্পানি করদাতা। আর ২ শতাংশ কোম্পানি থেকেই মোট আয়করের ৬৫ শতাংশ আসে। ব্যক্তি এবং কোম্পানি মিলিয়ে বর্তমানে দেশে মোট করদাতার সংখ্যা ২৮ লাখ ৫১ হাজার ৯৩৪। ৬টি স্তরে কোম্পানি কর দেয়। সর্বনিম্ন করহার ২৫ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ। তবে অনেক কোম্পানির বিরুদ্ধেই কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে এনবিআর সংশ্লিষ্টদের মতে, যোগ্য সব প্রতিষ্ঠানকে করের আওতায় আনার জন্য টাস্কফোর্স কাজ করছে। ২০২০ সালের আগস্টে রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৬ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি ভুয়া অডিট রিপোর্ট বন্ধ ও করজালের আওতা বাড়াতে কাজ করছে। ২০২০ সালে প্রায় ৭৭ হাজার কোম্পানির টিআইএন ছিল। ওই সময়ে যাদের টিআইএন ছিল না তাদের তা করতে বাধ্য করা হয়। যে কারণে দেশে এখন টিআইএনধারী কোম্পানির সংখ্যা বেড়েছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি