ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ঝরে পড়া ও ইঁদুরের গর্তে জমানো ধান সংগ্রহে মেতে উঠেছে স্থানীয় শিশু-কিশোরেরা।
সকালের রোদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দল বেঁধে সবাই সদ্য কেটে নেয়া আমনের মাঠে নেমে পড়ে। মাটি খুঁড়ে ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করে তারা। এছাড়া আমন ধান কেটে নেয়ার পর খেতে অবশিষ্ট পড়ে থাকা ধানের শীষ কুড়িয়ে নিচ্ছে শিশুরা। যখন ধানের পরিমাণ বেশি হবে তখন তা বিক্রি করে, কেউ আবার সে ধান মজুদ করে রাখে নিজেদের জন্য।
এক দলের শিশুরা বলে, মালিকরা ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার পর অনেক ধানের ছড়া এমনিতেই পড়ে থাকে, সেগুলো আমরা কুড়িয়ে নিই। এছাড়াও ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে অনেক ধান পাওয়া যায়। এসব ধান আমরা বাড়িতে জমা করে রাখি। যখন ধানের পরিমাণ বেশি হবে তখন তা বিক্রি করি।
রাণীশংকৈল উপজেলার ভরনিয়া মণ্ডলপাড়া গ্রামে ধান সংগ্রহ করতে আসা ১০ বছরের শিশু নিমাই চন্দ্র জানায়, বিভিন্ন মাঠ থেকে সংগ্রহ করা ধান বিক্রির টাকা দিয়ে কেউ শীতের পোশাক, কেউ খাতা-কলম কেনে। আবার অনেকের পরিবারের ৩-৪ মাসের খাবারের খোরাক হিসেবে ব্যবহার করেন।
স্থানীয় প্রবীণ কৃষক আবুল হাসান বলেন, আগেকার সময়ে মাঠ ভরে যেত ধান কুড়ানি শিশুদের আনাগোনায়। তখনকার সময়ে ধান কাটার একটা উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। এখন সবকিছু পাল্টে গেছে।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ ও ফসল শূন্য মাঠ থেকে ধান কুড়ানোর বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। মাঠে ধান থাকা অবস্থায়ই ইঁদুর গর্তে ধান মজুদ করে রাখে। এসব ধান সংগ্রহ করা সময় সাপেক্ষ তাই কৃষকরা এসব ধানের দিকে নজর দেয় না। তাই স্থানীয় শিশুরা এগুলো সংগ্রহ করে বিক্রি এবং নিজেরাও চাল বানিয়ে খায়।
তবে এসব গর্তে সাপ,পোকা-মাকড় থাকতে পারে যা শিশুদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি