আব্দুল বারী স্বপন :
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা তাদের জমির ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। তৈরি করে খাচ্ছে নতুন ধানের পিঠে, পোলাও। তবে ব্যাতিক্রম হলো চাষাবাদকারী কৃষকের এসব আনন্দ থেকে বঞ্চিত ভূমিহীন দরিদ্র পরিবারগুলো। ধান গোলায় ভরা কৃষকের কাজ করে মজুরি বাবদ ধান, অথবা কাজের টাকা দিয়ে পছন্দের ধান কিনে অনেক দরিদ্র পরিবার পিঠে, পোলাও খায়। কিন্তু কিছু দরিদ্র পরিবার আছে যারা সামান্য মজুরি দিয়ে সংসার সামলাতে হয়। পিঠে পোলাও খাবার আশা তাদের মনে চাপা থাকে। এ সকল পরিবারের সন্তানেরা কখনও মায়ের কাছে বায়না ধরে পিঠে পোলাও খাবার। তাই মা তার সন্তানকে পাঠায় অথবা নিজেই ইঁদুর জমির ধান কেটে গর্তে ভরানো ধান সংগ্রহ করতে। দরিদ্র পরিবারে শিশুরা অতি আনন্দে কোদাল, পাচুন, বস্তা কিংবা ডালি নিয়ে ধান কাটা জমিতে যেয়ে ইঁদুরের গর্ত খুঁরে ধান সংগ্রহ করে বাড়িতে আনে। সে ধান থেকে মা সন্তানকে পিঠে পোলাও তৈরি করে খাওয়ায়। সরজমিনে গেলে দেখা যায়, দক্ষিণ কোলকোন্দের ভূমিহীন দিন মজুর শিমন কাজের কারণে গাজিপুরে থাকায় তার স্ত্রী রুমি বেগমের সন্তান ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করছে। একই এলাকার ভূমিহীন ভ্যান চালক সুমনের সন্তান, শ্রমিক মন্তাজের স্ত্রী আমিনা, বিধবা মহিমা, ভিক্ষুক বাচ্চা মিয়ার স্ত্রী মনি, বিধবা রাশেদ ইঁদুরের গর্ত খুঁরে ধান আনছে। শুধু ইঁদুরের গর্ত থেকে নয়, কৃষক জমি থেকে ধান আনার সময় পড়ে যাওয়া ধানের শিষ কুড়ায়। ইঁদুরের গর্তের ধান ও কুড়ানো ধানের শিষেই এ সকল পরিবারের মাঝে পিঠে পোলাও খাওয়ার আনন্দ দেয়। এ সকল পরিবার জানায়, আবাদ করার মত জমি না থাকায়, ধান কাটার পর ইঁদুরের গর্ত থেকে ও জমিতে পড়ে থাকা ধানের শিষ কুড়ে ১০ থেকে ২০ কেজির মত ধান পাই। সে ধান থেকে আমরা পিঠে পোলাও খাই।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি