অনলাইন ডেস্ক :
ছোট ছোট বোটে করে বেআইনিভাবে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষকে ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে পাচার করা হয়েছে গত দেড় বছরে। এমনই অপারেশনের সঙ্গে যুক্ত কিছু গ্রুপ ও সদস্যকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অপারেশনে যুক্ত ছিল ইউরোপের ৫টি দেশ। তারা হলো বৃটেন, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও জার্মানি। এভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়া বন্ধে তারা সবচেয়ে বড় অনুসন্ধান চালায়। এ সময় কয়েক ডজন মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান। ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) বলেছে, কর্মকর্তারা গত মঙ্গলবার লন্ডনের ডকল্যান্ড এবং ক্যাটফোর্ড থেকে এমন চক্রের সঙ্গে যুক্ত ৬ জন পুরুষ ও একজন নারীকে গ্রেপ্তার করেছে। জার্মান পুলিশ বলেছে, এসব অনুসন্ধান ও গ্রেপ্তার অভিযানে সহযোগিতা করেছে ইউরোপোল এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিচারিক এজেন্সি ইউরোজাস্ট। বলা হয়েছে, পাচারকারী গ্যাংটি এসব বোট, ইঞ্জিন এবং অন্যান্য সরঞ্জামকে কেনার ক্ষেত্রে জার্মানিকে ব্যবহার করতো। তারপর সরঞ্জাম নেয়া হতো তুরস্কের ভিতর দিয়ে। তারপর ওই নৌযান ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হতো, যাতে অভিবাসীরা বৃটেন যেতে পারেন। প্রতিবার ইংলিশ চ্যানেল ক্রস করার জন্য তারা নিতো ৬৫ হাজার পাউন্ড। এর প্রতিটি বোটে ২০ জন পর্যন্ত মানুষ গাদাগাদি করে পাড়ি দিতেন। বৃটেনের ক্যাটফোর্ডে রেইশ গ্রিন এলাকা থেকে অভিবাসীদেরকে বেআইনি সুযোগ সুবিধা করে দেয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৬ বছর বয়সী এক যুবককে। আইল অব ডগস এলাকার সেইন্ট ডেভিডস স্কয়ার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২২ বছর বয়সী আরেক যুবককে। ওদিকে ২০ বছর বয়সী এক যুবতী ও ১৮ বছর বয়সী এক কিশোরকে ‘ক্লাস এ’ মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা এসব মাদক সাপ্লাই দিতো। তাদেরকে নিরাপত্তা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। অভিবাসন বিষয়ক অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও দু’জনকে। এনসিএ বলেছে, কর্মকর্তারা এযাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক অপারেশন চালিয়েছেন। তারা অপরাধী নেটওয়ার্ককে টার্গেট করে এসব অভিযান চালিয়েছেন। বিশেষ করে যেসব হাজার হাজার মানুষকে পাচার করে বৃটেনে নেয়া হয় ছোট ছোট বোটে করে সেদিকে দৃষ্টি দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে সুসংগঠিত গ্রুপ আছে, যারা অভিবাসীদেরকে নিয়ে যেতো ইংল্যান্ডে। এটাকে বেআইনি নেটওয়ার্কের একটি বড় প্রাণকেন্দ্র হিসেবে মনে করা হয়। জার্মানির ওসনাব্রুক এলাকার পুলিশকে উদ্ধৃত করে সেখানকার ডার স্পাইজেল পত্রিকা বলেছে, এসব নেটওয়ার্ক গত এক বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে ১০ হাজার পর্যন্ত মানুষকে পাচার করেছে। অভিযানে জার্মানির ওসনাব্রুক শহরে ইরাকি বংশোদ্ভূত কুর্দিদের সন্দেহ করা হয়। বেশ কিছু গুদাম ও প্রাইভেট ঠিকানায়ও তল্লাশি চালানো হয়। এসব গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির কাছে অস্ত্র আছে- এটা ধরে নিয়ে মোতায়েন করা হয়েছিল স্পেশাল ফোর্স। ছোট ছোট বোটে করে বাণিজ্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে জানুয়ারিতে ফ্রান্স ও বৃটেনের সঙ্গে যোগ দেয় জার্মান পুলিশ। জার্মান প্রেস এজেন্সি ডিপিএ’র মতে, পাচারকারীরা ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়ার জন্য যেসব বোট ও মোটর ব্যবহার করে তা আসে জার্মানি থেকে। এসব বোট কেনার পর তা নিয়ে যাওয়া হয় বেলজিয়ামে। ছোট ছোট বোট, আউটবোর্ড মোটর অথবা লাইফ ভেস্ট কেনার ক্ষেত্রে ফরাসি কর্তৃপক্ষ কড়াকড়ি করেছে। সেখানে এসব কিনতে গেলে আইডি প্রদর্শন এবং টেলিফোন নাম্বার দেয়া বাধ্যতামূলক। ফলে ওই চক্রটি এজন্য জার্মানিকে ব্যবহার করতে থাকে ক্রমবর্ধমান হারে।
আরও পড়ুন
বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি
চুয়াডাঙ্গায় রাতে বৃষ্টি দিনে সূর্যের চোখ রাঙানি, রেকর্ড তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি
তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই ২৮ এপ্রিল খুলছে মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ