অনলাইন ডেস্ক :
একটি মুহূর্ত ছাড়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আক্রমণভাগকে যেন খুঁজেই পাওয়া গেল না। একের পর এক আক্রমণে দলটিকে কোণঠাসা করে রাখল চেলসি। তবে ওই এক মুহূর্তের ভুলেই সব ভেস্তে যেতে বসেছিল টমাস টুখেলের দলের। যার দোষে সব হারানোর দশা, পরে সেই জর্জিনিয়োর গোলেই একটি পয়েন্ট পেল চেলসি। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে রোববার প্রিমিয়ার লিগে বড় দুই দলের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর জেডন স্যানচোর গোলে এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। পরে সমতা ফেরান জর্জিনিয়ো। হাইভোল্টেজ লড়াইটি শুরুর আগেই বড় খবরের জন্ম দেয় ইউনাইটেড। সাম্প্রতিক সময়ে পারফরম্যান্স আশানুরূপ না হলেও নিয়মিত গোল ঠিকই পাচ্ছিলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। তবে পর্তুগিজ তারকাকে বেঞ্চে রেখে মাঠে নামে তারা। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমেও অবশ্য নিজের ছাপ রাখতে পারেননি পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার। স্যানচোর গোলটি ছাড়া পুরো ম্যাচে আক্রমণে ইউনাইটেড উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারেনি। সংখ্যার হিসেবে গোলের উদ্দেশে সর্বমোট তিনটি শট নিতে পারে তারা, যার একটি ওই গোল। আরেকটি শট লক্ষ্যে থাকলেও তা প্রতিপক্ষকে মোটেও ভাবাতে পারেনি। অন্যদিকে মুহুর্মুহু আক্রমণে চেলসি ২৪টি শট নিতে পারে, যার ছয়টি লক্ষ্যে। কিন্তু এত ভালো খেলেও শেষ পর্যন্ত হতাশাই সঙ্গী তাদের। ডিফেন্ডার ভিক্তর লিনদেলোভের দুর্বল রক্ষণে ম্যাচের শুরুতেই গোল খেতে বসেছিল ইউনাইটেড। রক্ষা পায় গোলরক্ষক দাভিদ দে হেয়ার নৈপুণ্যে। ক্যালাম হাডসন-ওডোইয়ের শট কোনোমতে পা বাড়িয়ে ঠেকান তিনি। রক্ষণাত্মক কৌশল নেওয়া ইউনাইটেড নিজেদের অর্ধ থেকে তেমন বেরই হতে পারছিল না। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সময় বল দখলে রেখে একের পর এক আক্রমণে ওঠা চেলসি ৩০তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোলবঞ্চিত হয়। আন্টোনিও রুডিগারের ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে পড়া দে হেয়ার হাত ছুঁয়ে ক্রসবার কাঁপায়। ৩৫তম মিনিটে ব্রুনো ফের্নান্দেসের ভুলে বল পেয়ে যান হাডসন-ওডোই। তবে তার নিচু শটে তেমন গতি ছিল না, তাই ঝাঁপিয়ে বল নিয়ন্ত্রণ নিতে বেগ পেতে হয়নি দে হেয়ার। ৪৫তম মিনিটে রিস জেমসের ফ্রি কিকে বল রক্ষণের ওপর দিয়ে গিয়ে এক ড্রপে সামান্য বাঁক খেয়ে জালে ঢুকতে যাচ্ছিল। বলে চোখ রেখে শেষ মুহূর্তে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান দে হেয়া। স্প্যানিশ এই গোলরক্ষকের নৈপুণ্যেই সমতায় থেকে বিরতিতে যায় ইউনাইটেড। দ্বিতীয়ার্ধেও একইভাবে শুরু করে চেলসি। তবে খেলার ধারার বিপরীতে ৫০তম মিনিটে তাদের হতভম্ব করে দেয় ইউনাইটেড। গোলটিতে পুরো দায় জর্জিনিয়োর। তাদের একটি আক্রমণ রুখে নিজেদের ডি-বক্সের মুখ থেকে উঁচু শট নেন ব্রুনো ফের্নান্দেস। মাঝলাইনের ওপারে চেলসির একমাত্র ‘ইন-ফিল্ড’ খেলোয়াড় ছিলেন জর্জিনিয়ো, সহজেই বল পায়ে নিতে পারতেন তিনি, কিন্তু তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। সুযোগে বল পেয়ে এক ছুটে ডি-বক্সে ঢুকে গোলটি করেন স্যানচো। লক্ষ্যে এটাই ছিল ইউনাইটেডের প্রথম শট। গত সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে শেষ দিকে জয় নিশ্চিত করে চেলসির হয়ে গোলের খাতা খোলেন স্যানচো। পাঁচ দিন বাদে প্রিমিয়ার লিগেও পেলেন জালের দেখা। গত জুলাইয়ে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে আসা স্যানচোকে তুলেই ৬৪তম মিনিটে রোনালদোকে নামায় ইউনাইটেড। এর খানিক পরই ম্যাচে সমতা ফেরে। ৬৯তম মিনিটে সফল স্পট কিকে নিজের ওই ভুলের কিছুটা প্রায়শ্চিত্ত করেন জর্জিনিয়ো। ডি-বক্সে চিয়াগো সিলভাকে ইউনাইটেড ডিফেন্ডার অ্যারন ওয়ান-বিসাকা ফাউল করলে পেনাল্টিটি পায় স্বাগতিকরা। যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে ব্যবধান গড়ে দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পান আন্টোনিও রুডিগার। কিন্তু ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও তিনি উড়িয়ে মারলে একরাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্লুজরা। ১৩ ম্যাচে ৯ জয় ও তিন ড্রয়ে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে চেলসি। দিনের আরেক ম্যাচে ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেডকে ২-১ গোলে হারানো ম্যানচেস্টার সিটি ১ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আছে। তিন নম্বরে লিভারপুলের পয়েন্ট ২৮। সমান ২৩ পয়েন্ট নিয়ে পরের দুটি স্থানে যথাক্রমে ওয়েস্ট হ্যাম ও আর্সেনাল। ১৩ ম্যাচে মাত্র পাঁচটিতে জেতা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে আট নম্বরে।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা