March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, September 27th, 2021, 8:59 pm

ইউপি নির্বাচনে জয়ী হতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ঢাকায় খুন, গ্রেপ্তার ১

অনলাইন ডেস্ক :

বাগেরহাটের মোংলার এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রতিপক্ষ মেম্বার প্রার্থীকে ফাঁসানোর জন্য এক অসহায় নারীকে ঢাকার সাভারে এনে বাসাভাড়া নিয়ে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ে এসব কথা বলেন পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার। তিনি বলেন, মোংলা থানার ৬ নম্বর চিলা ইউনিয়নের নির্বাচন হয় গত ২০ সেপ্টেম্বর। এই ইউপি নির্বাচনে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী ছিলেন হালিম হাওলাদার, বেলাল সরদার এবং এশারাত। এদের মধ্যে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত মেম্বার ছিলেন হালিম হাওলাদার। বেলাল নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বলে হালিম ভাবছিলেন তিনি পরাজিত হবেন। তাই বেলালকে নির্বাচন থেকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেন হালিম। এরপর তিনি পূর্বপরিচিত পিরোজপুরের জামাল হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বেলালকে ফাঁসানোর জন্য একটি খুনের পরিকল্পনা করেন তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৩০ হাজার টাকায় জামালের সঙ্গে হালিমের চুক্তি হয়। এরপর তাকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা দেন। ডিআইজি বনজ কুমার বলেন, জামাল হাওলাদার ঢাকার সাভারের মশিউর রহমান মিলন নামে এক কবিরাজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার কাছে খুন করার জন্য একজন ভিকটিম চান জামাল। এরপর মিলন পারুল বেগম নামে এক নারীর সঙ্গে জামালের পরিচয় করিয়ে দেন। পারুলকে বিয়ে করার কথা বলে সাভারের নামা বাজার এলাকায় গত ৭ সেপ্টেম্বর স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেন জামাল। ওই রাতেই জামাল পারুলকে খুন করে পালিয়ে যান। পরদিন বাসা থেকে কেউ বের না হওয়াতে ওই বাসার কেয়ারটেকার জানালা খুলে দেখতে পান ওই নারী খুন হয়েছেন। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। বাসা থেকে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়। যার নাম বেলাল সরদার। গ্রামের বাড়ি মোংলার চিলা ইউনিয়নে। ওই ঘটনায় সাভার থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা হয়। পিবিআই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায়। জাতীয় পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে বেলালের সঙ্গে যোগাযোগ করে পিবিআই। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত জাতীয় পরিচয়পত্র ধরে বেলালকে পিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার কাছে জানতে চায়, তার কোনও শত্রু আছে কি না। তার নির্বাচনের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বি হালিম ও এশারাতের নাম বলেন বেলাল। এ ছাড়া আর কোনো শত্রু নেই। বনজ কুমার মজুমদার আরও বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে একপর্যায়ে আমরা জানতে পারি, হালিমের ঢাকায় মশিউরের সঙ্গে ঘনঘন যোগাযোগ হয়। এরপর ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করে পিবিআই। তার নাম জামাল হাওলাদার। তার ছবি সাভারের ওই বাসার কেয়ারটেকারকে দেখালে সবাই জামালকে শনাক্ত করেন। তারা বলেন, পারুলকে নিয়ে জামালই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। এরপর জামালকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মশিউর রহমান মিলনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তারা দুজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। হালিম মেম্বারের পরিকল্পনাতেই এই হত্যাকা- হয়। মূলত প্রতিদ্বিন্দ্বি প্রার্থী বেলালকে ফাঁসানোর জন্যই এই হত্যাকা- ঘটানো হয় বলে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। তবে নির্বাচনের কারণে পিবিআই হালিমকে তাৎক্ষিণক গ্রেপ্তার করেনি। ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন শেষ হওয়ার পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর হালিমকে গ্রেপ্তার করে। নির্বাচনে বেলাল বা হালিমের কেউ জেতেননি। জয় পেয়েছেন তৃতীয় প্রার্থী এশারাত নামে এক ব্যক্তি। পিবিআই প্রধান বলেন, ওই নারীকে হত্যার পর জামাল ও হালিম বেশ কয়েক বার ফোনে কথা বলেছেন। প্রতিপক্ষ গ্রেপ্তার না হলে আরও খুন করার পরিকল্পনা করেছিলেন তারা। তাদের টার্গেট ছিল একজন হিন্দু ব্যক্তি। ভিকটিম পারুল বেগম সাভারে একা থাকতেন। শিশুদের পোশাক ফেরি করতেন। আর জামাল হাওলাদার ওরফে আসাদুজ্জামান কাঁচের ভাঙারি ব্যবসা করতেন।