তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে শনিবার রাতে এবং রবিবার ভোরে সহিংসতায় যশোর ও খুলনা জেলায় দুজন নিহত হয়েছেন।
খুলনার তেরখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নে বাবুল শিকদার (৩৮) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মহসিনের সমর্থক ছিলেন।
রবিবার ভোর সোয়া ৬টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে ইউনিয়নের কুলাপাটগাতি গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নির্বাচনী বিরোধকে কেন্দ্র করে শনিবার দিবাগত রাতে কুলাপাটগাতি গ্রামের বাবুল শিকদারকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল হোসেনের লোকজন হাতুড়ি দিয়ে পিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকাবাসী মাথায় গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত বাবুলকে মূমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার ভোর সোয়া ৬টার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল আলম জানান, ঘটনার পর থেকে হামলার সাথে জড়িতরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। তবে এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি।
এদিকে, যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে শার্শার কায়বা ইউনিয়নে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সহিংসতায় আহত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
মৃত কুতুব উদ্দীন (৩৫) রুদ্রপুর গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে ও ওই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী ইকতিয়ার রহমানের সমর্থক।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান।
জানা গেছে, শনিবার দুপুরে শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের রুদ্রপুরে নিজেদের সমর্থকদের সংঘর্ষে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীসহ ১২ জন আহত হন। তাদের মধ্যে ছয় জনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত মেম্বার প্রার্থী (১ নম্বর ওয়ার্ড) ইকতিয়ার রহমান বলেন, তার সমর্থকরা রুদ্রপুর বাজারে পোস্টার লাগাতে গেলে বর্তমান মেম্বর হবিবর রহমানের (প্রার্থী) নেতৃত্বে তার লোকজন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ওই সময় ইকতিয়ারসহ তার চাচাত ভাই কুতুব উদ্দিন, শাহাবুদ্দিন, আরশাদ, ইউনুস, আলাউদ্দিনসহ ১২ জন আহত হন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টার দিকে কুতুব উদ্দিন মারা যান।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের ডা. নাহিদ শাহরিয়ার সাব্বির জানান, আলাউদ্দিন (৫৫) নামে আহত একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র ইন্সপেক্টর (ডিবি) রূপন কুমার সরকার সংঘর্ষে কুতুব উদ্দিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সারাদেশে রবিবার তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয় এবং কোনো বিরতি ছাড়াই চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
১০ হাজার ১৫৯টি ভোটকেন্দ্রের অধীনে প্রায় দুই কোটিরও বেশি মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে এরই মধ্যে ৫৬৯ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১০০ জন, সংরক্ষিত আসনে ১৩২ জন এবং সদস্য পদে ৩৩৭ জন নির্বাচিত হন। ফলে ১০০টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের প্রয়োজন হবে না।
বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ছাড়াও প্রায় ৪ হাজার ৫০০ চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত ১১ হাজার ও সাধারণ সদস্য পদে সাড়ে ৩৪ হাজার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক