March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, October 21st, 2021, 7:58 pm

ইকবালকে খুঁজে বের করার সর্বোচ্চ চেষ্টা নিয়েছি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক :

কুমিল্লায় পূজামন্ডপে পবিত্র কোরআন রাখা ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত হওয়া ইকবাল হোসেন মোবাইল ব্যবহার করছে না জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তাকে খুঁজে বের করার সর্বোচ্চ চেষ্টা নিয়েছি। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সচিবালয়ে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান। ইকবাল হোসেনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কখন নাগাদ তাকে জনসম্মুখে হাজির করা হবে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লার যে টার্গেট…আমি আগেই বলেছি আমরা সুনিশ্চিত, যে লোকটি করেছে, আমাদের ক্যামেরার মাধ্যমে তাকে আমরা চিহ্নিত করেছি। যে মাজারের সঙ্গে মসজিদ, ওটা খুব প্রসিদ্ধ মসজিদ। দেখা গেছে সেই মসজিদে রাত ৩টার দিকে সে গেছে। একবার নয় তিনবার গেছে। তিনি বলেন, সেখানে অবস্থান করে মসজিদের দুজন খাদেম ছিলেন, তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছে। আমাদের অভিজ্ঞ টিম দীর্ঘক্ষণ এটা অ্যানালাইসিস করে সুনিশ্চিত হয়েছে। এই ব্যক্তিটি (ইকবাল) মসজিদ থেকে কোরআন এনে রেখেছে, সেটা তারই কর্ম। রেখে সে মূর্তির গদাটি কাঁধে করে নিয়ে এসেছেন, সেই দৃশ্যটিও আপনারা দেখেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এই লোকটি (ইকবাল) কার প্ররোচনায় কার নির্দেশে, কীভাবে এই কর্মটি কররো… সেই কাজটি পরিকল্পনা মাফিক করলো। দুই তিনবার যাওয়া আসার মধ্যে সে এই কর্মটি শেষ করেছে। কাজেই এটি নির্দেশিত হয়ে কিংবা কারও প্ররোচনা ছাড়া করেছে বলে আমরা এখনও মনে করি না। তাকে ধরতে পারলে বাকি সব উদ্ধার করতে পারবো বলে বিশ্বাস করি। আসাদুজ্জামান খান বলেন, সে (ইকবাল) কোনো মোবাইল ব্যবহার করছে না। যারা তাকে পাঠিয়েছিল তারাও হয়তো… এখনও বলতে পারছি না…লুকিয়ে রাখতে পারেন। তাকে খুঁজে বের করার সর্বোচ্চ চেষ্টা নিয়েছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুর্গাপূজার সময়ে কুমিল্লা থেকে শুরু করে রংপুর পর্যন্ত যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এখন পরিবেশ পুরোপুরি শান্ত। মানুষের মন থেকে আতঙ্ক কমে গেছে। তিনি বলেন, কুমিল্লার ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে একজনকে ধরা হয়েছে। অভিজ্ঞ টিমের পর্যবেক্ষণ শেষে এটা জানা গেছে। ওই ব্যক্তি কার নির্দেশে ও প্ররোচনায় এ কাজ করেছে তা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সে একা এ কাজ করেনি। কারো নির্দেশে করেছে। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে। আটককৃত ব্যক্তি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না। তাই তাদের ধরতে সময় লাগছে। তাদের ধরা গেলে সব তথ্য বের হয়ে আসবে। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তিনি বলেন, কক্সবাজার এবং ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও বাড়ানো হবে। বিশেষ করে কোস্ট গার্ড। ক্যাম্পগুলোতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সন্ধ্যার পর মিয়ানমার থেকে কোনও ইঞ্জিনচালিত বাহন আসবে না। নাফ নদীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি আরও বাড়ানো হবে। এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে যোগাযোগ আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাকি রোহিঙ্গাদের ডিসেম্বরের মধ্যে ভাসানচরে নেওয়া হবে। মহিবুল্লাহ হত্যার সাথে জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তারাই এই হত্যার সাথে জড়িত। সীমান্তে নিরপরাধ কাউকে গুলি না, সীমান্ত রক্ষার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তাই করা হবে। ভাসানচর থেকে সন্ধ্যার পর আর মূল ভূখ-ে কোন নৌযান চলাচল করতে পারবে না বলে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভাসানচর থেকে সন্ধ্যার পর আর মূল ভূখ-ে কোনো নৌযান চলবে না। সন্ধ্যার পর ভাসানচর থেকে নোয়াখালী কিংবা হাতিয়ায় যাতায়াত বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর ভেতরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এসব এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে। এ ক্ষেত্রে এপিবিএন, কোস্টগার্ডসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া হবে। আসাদুজ্জামান খান কামাল কলেন, ক্যাম্পের ভেতরে পুলিশ, এপিবিএন, আনসার ও র‌্যাবের যৌথ টহল আরও বৃদ্ধি করা হবে। ক্যাম্পের বাইরে সেনবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব রয়েছে। তারা সবসময় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে ও থাকবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক প্রবেশ, মাদক ব্যবস্থা ও বিক্রয় রোধে মনিটরিং বাড়ানো হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চালানো হবে বলেও জানান মন্ত্রী। ক্যাম্পগুলোতে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বেশ কিছু ওয়াচ টাওয়ার করা হয়েছে, আরও হবে। কিছুদিনের মধ্যেই অভ্যন্তরীণ রাস্তার কাজও শুরু হবে। কোনো কোনো জায়গায় অনেকখানি হয়েছে। সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের কাজ করছে। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের সুবিধাও বাড়ানো হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেটা অব্যাহত থাকবে। দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা চলছে। দ্বিপাক্ষিক কথাবার্তা আরও জোরদার করা হবে। তিনি আরও বলেন, মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে সীমান্তে টহল আরও বাড়ানো হবে। নাফ নদীতে আইন-শৃঙ্খলা বহিনীর তদরকি আরও জোরদার করা হবে। প্রয়োজনে উখিয়া ও টেকনাফে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।