November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, April 25th, 2023, 8:07 pm

ইতালিতে যৌনশিক্ষা বাধ্যতামূলক

অনলাইন ডেস্ক :

ইউরোপের বেশির ভাগ দেশেই যৌনশিক্ষা বাধ্যতামূলক। হাতেগোনা যে কয়েকটি দেশ যৌনশিক্ষাকে পাঠক্রমভুক্ত করার বিপক্ষে, ইতালি তাদের মধ্যে অন্যতম। ৪৮ বছর ধরে চেষ্টা চলছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ইতালিতে যৌনশিক্ষাকে স্কুলের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করার প্রথম জোরালো পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। তারপর থেকে গত ২০২১ সালের আগ পর্যন্ত আরও অন্তত ১৪ বার একই দাবি তোলা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই সরকার সে আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে বা আবেদনকারীদের অপেক্ষায় থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

২০২১ সালে ইতালির ইতিহাসে ১৬তম বারের মতো তৎকালীন সরকারের কাছে এ দাবি তুলেছিলেন স্টেফানিয়া আসারি। কিন্তু ফলাফল একই, অর্থাৎ সরকারের সেই এক জবাব, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে সারা দেশে যৌনশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা সম্ভব নয়। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে শুধু যে ইতালিতেই যৌনশিক্ষা বাধ্যতামূলক নয়, তা কিন্তু নয়। আরও আটটি দেশে যৌনশিক্ষা এখনও পাঠক্রমের বাইরে। সে দেশগুলো হলো বুলগেরিয়া, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, লিথুয়ানিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ক্রোয়েশিয়া ও স্পেন। জার্মানিসহ ইউরোপের বেশির ভাগ দেশেই স্কুল পর্যায়ে যৌনশিক্ষা বাধ্যতামূলক।

যেসব দেশের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌনতার ভালো-মন্দ জানতে পারছে না, সেসব দেশে শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটে প্রয়োজনীয় জ্ঞান আহরণের জন্য প্রচুর সময় কাটাচ্ছে। মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল সায়েন্স বিভাগের সাইকোথেরাপিস্ট এবং গবেষক আলবার্তো পেল্লাই জানান, ইতালিতে শিশু-কিশোরদের এই প্রবণতা বেশ উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তার কাছে অবশ্য শিশু-কিশোরদের যৌনতা সম্পর্কে ধারণা নিতে ইন্টারনেটের দিকে ঝুঁকে পড়া বড় কোনো সমস্যা নয়। বড় সমস্যা হলো-ইন্টারনেটে যৌনতা সম্পর্কে বিজ্ঞানসম্মত সঠিক তথ্য পাওয়া খুব কঠিন। বেশিরভাগ ওয়েবসাইটে একেবারে মিথ্য বা অর্ধসত্য পরিবেশন করা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে যৌনতাকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে-যা খুবই হিংস্র ও অমানবিক।

এমন অবৈজ্ঞানিক জ্ঞান নিয়ে যৌনকর্ম করার কারণে অনেক শিশু-কিশোরের খুব অল্প সময়ের মধ্যে সেক্সুয়েলি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ (এসটিডি) অর্থাৎ ক্লামিডিয়া এবং সিফিলিসের মতো যৌনবাহিত রোগ হয়ে যায়। ইতালিতে পাঠক্রমে যৌনশিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি আঞ্চলিক সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, কেন্দ্রীয় সরকার সারা দেশে যৌনশিক্ষা বাধ্যতামূলক না করলে কাক্সিক্ষত পরিবর্তন কখনও আসবে না। তারা মনে করেন, যৌনশিক্ষার বিষয়টিকে পরিবার এবং বাবা-মায়দের ওপর ছেড়ে দেওয়া কোনো সমাধান নয়। ইতালির সেক্সোলজি সেন্টার (সিআইটেস)-এর প্রোসিডেন্ট মারিয়া ক্রিস্টিনা ফ্লোরিনি মনে করেন, ‘স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের সারা বছর ধরে যৌনশিক্ষা দেওয়া, কারণ কোন শিক্ষার্থী কেমন তা তারা খুব ভালো জানেন।’