অনলাইন ডেস্ক :
ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় শহর ভেনিস জুড়ে জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য খাল। এই খালের ভেনিস পর্যটকদের কাছে যেন স্বর্গরাজ্য। খালে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য পর্যটকরা ভিড় করত। কিন্তু খালগুলোয় পানি নেই এখন। কাঁদায় আটকে আছে নৌকা। যেগুলোকে স্থানীয় ভাবে বলা হয় ‘গোন্ডলা’।
শীত, ভাঁটা এবং বৃষ্টির অভাবের কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে এসব খাল। শীত যত বাড়ছে ভেনিসের গন্ডোলা ব্যবসায়ীদের চিন্তা আরো বাড়ছে। শীতের সঙ্গেই খালে পাল্লা দিয়ে নামছে পানির স্তর। তবে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতির পেছনে উচ্চচাপ, পূর্ণচন্দ্র, সমুদ্র¯্রােতসহ কিছু কারণ রয়েছে।
ভেনিস সিটি কাউন্সিলের স্রোতসংক্রান্ত বিভাগে প্রধান আলভিস পাপা জানান, খরার কারণে হ্রদ ও নদীতে পানি কমে গেছে। ভূমধ্যসাগরে উচ্চচাপসহ এমন একটি পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যার প্রভাবে বৃষ্টি কম হচ্ছে। ভাঁটা পড়ছে। তবে ভেনিসের বড় বড় খালগুলোতে এখনও কোনো রকম পানির জোগান স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। শহরের অপেক্ষাকৃত ছোট খালগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। সাধারণত, জোয়ারের টানে ভেনিসের খালগুলো পানিতে ভরে থাকে। কিন্তু এ বারের শীতে ভাটার টানে পানি সাগরে। পানি তো ফিরছেই না এর ওপর বৃষ্টিও নেই। ভেনিসে গন্ডোলা চড়ার সবচেয়ে নামী জায়গার নাম ‘সেন্ট মার্কস স্কোয়ার’। সেখানেও একের পর এক গন্ডোলা কাদায় আটকে আছে। শহরটির জরুরি স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান পাওলো রোসি বলেন, ‘বেশির ভাগ জায়গায় আমরা অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। হেঁটে রোগীদের চিকিৎসাকেন্দ্রে আনা-নেওয়া করতে হচ্ছে।’ লিগামবিয়েন্তে নামে একটি পরিবেশবাদী গোষ্ঠী জানিয়েছে, ইতালির নদী-নালাগুলো প্রচ- পানির অভাবে ভুগছে। বিশেষ করে দেশটির উত্তর দিকের অবস্থা খারাপ। ইতালির সর্ববৃহৎ নদী ‘পো’, যেটি আল্পস থেকে বয়ে উল্টর পূর্ব দিকের আদ্রিয়াকের দিকে বয়ে গেছে। সেই পো নদীতে এখন সাধারণ সময়ের চেয়ে ৬১ শতাংশ কম পানি রয়েছে বলে জানিয়েছে লিগামবিয়েন্তে। খরা পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করার পর গত বছর পো নদীর আশপাশের অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। ওই পো নদীর ওপর নির্ভর করেই ইতালির এক তৃতীয়াংশ কৃষি পণ্য উৎপাদিত হয়। গত বছর পো নদীতে গত ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরা দেখা যায়। ইতালির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বর্তমান এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ইতালিতে অন্তত ৫০ দিন মুষলধারে বৃষ্টির প্রয়োজন। সূত্র: আনন্দবাজার, সিএনএন।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু