বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্বাগতিক সম্প্রদায়ের জন্য জরুরি মানবিক সেবা দিতে আরও ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ডের তহবিল ঘোষণা করেছেন যুক্তরাজ্যের ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়কমন্ত্রী অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ান।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ব্যাংককে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) আঞ্চলিক সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সঙ্গে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
ট্রেভেলিয়ান বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদী সমাধান খুঁজতে যুক্তরাজ্য অঙ্গীকারবদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন অন্তর্ভুক্ত, যখন সেখানকার পরিস্থিতি উপযুক্ত হবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা নিরাপদে নিজ দেশে ফিরে যেতে না পারা পর্যন্ত আমরা চলমান মানবিক সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য আমরা বাংলাদেশে শরণার্থীদের সুরক্ষা সেবা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানির জন্য যুক্তরাজ্যের আরও ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা ঘোষণা করছি।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে টেকসই সমাধান এবং রোহিঙ্গা ও তাদের স্বাগতিক দেশগুলোর প্রতি সমর্থন নিয়ে আলোচনার জন্য আজকের সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।’
৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ডের তহবিলের মধ্যে রয়েছে-
রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানির জন্য আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মাধ্যমে ২ দশমিক ১ মিলিয়ন পাউন্ড।
শরণার্থী ও স্বাগতিক সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য এনজিওগুলোর মাধ্যমে ২ মিলিয়ন পাউন্ড। এনজিওগুলির মধ্যে রয়েছে- নরওয়েজিয়ান রেফিউজি কাউন্সিল, ড্যানিশ রেফিউজি কাউন্সিল, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি এবং হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন।
লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিক্রিয়া জানাতে এবং যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) মাধ্যমে ৪ লাখ ৫০০০০ হাজার পাউন্ড।
সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির সঙ্গে বৈঠক করবেন ট্রেভেলিয়ান।
২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য ৩৭০ মিলিয়ন পাউন্ড এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের সহায়তার জন্য প্রায় ৩০ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
এর মধ্যে খাদ্য, পানীয়, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যসেবা এবং সুরক্ষা পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যা ক্যাম্পগুলোর নারী ও মেয়েদের জন্য অত্যাবশ্যক।
যুক্তরাজ্য ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ সমর্থন করে এবং মিয়ানমারের জনগণের পাশে রয়েছে বলে জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আমরা সকল সহিংসতার অবসান এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য এবং প্রয়োজনীয় সকলের কাছে নিরাপদ ও বাধাহীন মানবিক অভিগম্যতার জন্য আমাদের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি।’
২০২৩ সালের মার্চে প্রকাশিত ইন্টিগ্রেটেড রিভিউ রিফ্রেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রোহিঙ্গাদের প্রতি যুক্তরাজ্যের অব্যাহত সমর্থন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রতি তার দীর্ঘমেয়াদী অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি