November 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, May 20th, 2024, 5:18 pm

ইরানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় এ পর্যন্ত যা জানা গেল

এপি, বৈরুত :

হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিহতের ঘটনায় ওই অঞ্চলজুড়ে চলছে শোকের মাতম।

সোমবার ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি কুয়াশাচ্ছন্ন পার্বত্য অঞ্চলে দুর্ঘটনাটি ঘটার পর ঘণ্টাব্যাপী অনুসন্ধান চালিয়ে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান ও অন্যান্যদের মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

এ ঘটনা নিয়ে এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে-

হেলিকপ্টারটিতে যারা ছিলেন ও যেখানে যাচ্ছিলেন

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানায়, দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান, দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও দেহরক্ষীদের বহন করছিল হেলিকপ্টারটি।

সীমান্তে ওই দলটি আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে একটি বাঁধ উদ্বোধন করে ফেরার পথে দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের দিজমার জঙ্গলে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

তবে ঠিক কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

যেভাবে চলে অনুসন্ধান

তুরস্কের একটি ড্রোন থেকে দুর্ঘটনার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যায়। ড্রোন থেকে পওয়া তথ্যে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম ইরানের একটি পাহাড়ের পাশে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

তেহরানের কর্মকর্তারা বলেছেন, দুর্ঘটনাস্থলটি পাহাড়, বনভূমি ও ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকার কারণে রবিবার শুরু হওয়া উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

আইআরএনএ-কে ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি পীর-হোসেন কুলিভান্দ বলেন, ‘প্রতিকূল আবহাওয়া সত্ত্বেও ৪০টি অনুসন্ধান দল মাঠে রয়েছে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে আকাশপথে ড্রোনের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালানো প্রায় অসম্ভব ছিল।’

দুর্ঘটনাস্থল যেভাবে আবিষ্কৃত হলো

সোমবার সকালে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ একটি ভিডিও প্রকাশ করে যেটিকে তারা ড্রোন থেকে ধারণ করা ফুটেজ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

ওই ফুটেজে দেখা যায়, বনভূমিতে আগুন লেগেছে। সেটিকে ‘একটি হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ’ বলে প্রথম সন্দেহ করা হয়। ফুটেজের স্থান শনাক্ত করে বোঝা যায় যে, আজারবাইজান-ইরান সীমান্তের প্রায় ২০ কিলোমিটার (১২ মাইল) দক্ষিণে একটি উঁচু পাহাড়ের পাশে ওই ঘটনা ঘটেছে।

আইআরএনএ’র প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, সংস্থাটি যে স্থানটিকে দুর্ঘটনাস্থল হিসেবে বর্ণনা করেছে, তা একটি সবুজ পর্বতশ্রেণির খাড়া উপত্যকায় অবস্থিত।

স্থানীয় আজেরি ভাষায় সৈন্যদের বলতে শোনা যায়, ‘ওই তো! আমরা (দুর্ঘটনাস্থল) পেয়েছি।’

কিছুক্ষণ পর ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে একটি অন-স্ক্রিন স্ক্রলিংয়ে বলা হয়, ‘হেলিকপ্টারে যারা ছিল, তাদের বেঁচে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

রাইসির মৃত্যু ইরানকে কীভাবে প্রভাবিত করবে?

রাইসিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির একজন বিশ্বস্ত অনুগত এবং দেশটির শিয়া ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তাকে খামেনির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হতো।

দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, কোনো প্রেসিডেন্ট মারা গেলে প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট দেশের প্রেসিডেন্ট হবেন। এক্ষেত্রে মোহাম্মদ মোখবারের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা।

খামেনি ইরানি জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন যে, হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় দেশের কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না।

এ ঘটনায় বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া

হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় অনুসন্ধান কার্যক্রমের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাশিয়া, ইরাক ও কাতার রাইসির জীবন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়। এমনকি অনুসন্ধান কার্যক্রমে সহায়তা করার প্রস্তাবও দেয় তারা।

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ ইরানকে প্রয়োজনীয় যেকোনো সহায়তার প্রস্তাব দেন।

ঐতিহ্যগতভাবে ইরানের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও সৌদি আরব বলেছে, আমরা এই কঠিন পরিস্থিতিতে ইরানের পাশে আছি।

তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।