সিনহুয়া, গাজা :
জাতিসংঘের একটি সংস্থা জানিয়েছে, চলমান ইসরায়েলি হামলার ফলে গাজা উপত্যকার জনসংখ্যার অন্তত ৬০ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
শনিবার জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর (ওসিএইচএ) সিনহুয়াকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেছে, ‘১৫ দিন আগে বর্তমান হামাস-ইসরায়েল রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হতে বাধ্য হয়েছেন।’
সংস্থাটি আরও বলেছে, ফিলিস্তিন শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) সঙ্গে যুক্ত ১৪৭টি শিক্ষামূলক জেলা এবং স্কুলে ৫ লাখ ৪৪ হাজারেরও বেশি লোক বাস করে। যার মধ্যে মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ এবং ইউএনআরডব্লিউএ’র সঙ্গে অনুমোদিত নয় এমন ৬৭টি স্কুলে ৭০ হাজার জন রয়েছেন।
বিবৃতিটি অনুযায়ী, প্রায় ১ লাখ ১ হাজার মানুষ অর্থোডক্স সেন্টার, গাজা শহরের গির্জা, হাসপাতাল এবং অন্যান্য সরকারি ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন।
উপরন্তু, ফিলিস্তিনের সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় অনুমান করছে, আশ্রয়দাতা পরিবারসহ প্রায় ৭ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ রয়েছেন।
বিবৃতি অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে ইউএনআরডব্লিউএ এডুকেশনাল অপারেশনস ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এমন এক সময়ে ক্রমবর্ধমান জনবহুল হয়ে উঠেছে, যখন পানি, খাদ্য এবং ওষুধের মতো মৌলিক সম্পদের মারাত্মক ঘাটতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।
কিছু শিক্ষামূলক জেলায় ইউএনআরডাব্লিউএ পানির ব্যবহারে রেশন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছে। এতে প্রতিদিন মাথাপিছু মাত্র এক লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
এতে বলা হয়, অতিরিক্ত ভিড় এবং মৌলিক সরবরাহের অভাব লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার প্রতিবেদনের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।
১৯ অক্টোবর ইউএনআরডাব্লিউএ খান ইউনিসে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের জন্য প্রথম শিবির স্থাপন করে। যেখানে ৬০টি তাঁবু রয়েছে এবং শত শত অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনি ছিটমহলের দক্ষিণ অংশে চলমান বোমা হামলা এবং যুক্তিসঙ্গত বাসস্থান খুঁজে পেতে ব্যর্থতার কারণে কিছু বাস্তুচ্যুত মানুষ উত্তর গাজা উপত্যকায় ফিরে আসছে বলে উপাখ্যানমূলক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বেসামরিক নাগরিকদের বাস্তুচ্যুতি এবং মৌলিক পরিষেবাগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত দুর্বল প্রবেশাধিকারপ্রাপ্ত শিশু, বয়স্ক, চিকিৎসা যত্নের প্রয়োজন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং গর্ভবতী নারীসহ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
তারা মানসিক ও সামাজিক দুর্দশা, অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা, তথ্যে প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত এবং অপব্যবহার বা শোষণের সম্ভাবনার মুখোমুখি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী অধিকৃত গাজা উপত্যকায় তাদের হামলা জোরদার করতে থাকে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ১৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৩ হাজারের বেশি আহত হয়েছে। ইসরায়েলে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২