November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, December 6th, 2022, 3:17 pm

ঈশ্বরগঞ্জে কৃষি উপকরণ বিক্রির ধুম পড়েছে

জেলা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ (ঈশ্বরগঞ্জ) :

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে পুরোদমে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটা। মাঠের ধান কাটতে ও গোলায় তুলতে কৃষক শ্রমিকরা নতুন কোদাল, কাঁচি, কেনা তৈরি ও সংস্কার কাজের জন্য কামার দোকানে এবং বাঁশ বেতের তৈরি খাদি, কুলা, ডোলা, ডালা, চালুনের দোকানে ভীর জমাচ্ছেন। কুটির শিল্পী ও কামার শিল্পীরা এখন দিনরাত নিরলস ভাবে কাঁচি, কোদাল, খাদি, কুলা, ডোলা, ডালা, চালুন তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন কুটির শিল্পী ও কামার দোকান ঘুরে ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত আমন ও বোর মৌসুমের সময় কাঁচি, কোদাল, খাদি, কুলা, ডোলা, ডালা, চালুনের যে মূল্য ছিল এবার তার চেয়ে কিছুটা বেশি।
কামার ব্যবসায়ী অধীর চন্দ্র বর্মন জানান, পূর্বের তুলনায় এখন লোহার বাজার দর অনেক বেশি। গত আমন মৌসুমে মজুরি সহ একটি কাঁচির মূল্য ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। বর্তমানে একটি কাঁচি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। তিনি বলেন, ৭০ টাকা কেজি দরের লোহা এখন ১শ ৩৫ টাকা হয়েছে। বেড়েছে কয়লার মূল্যও। কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও কৃষকরা তাদের সোনার ফসল ঘরে তুলতে ধান কাটার উপকরণ কাঁচি কোদাল অধিক মূল্য দিয়েই কামার দোকান থেকে তৈরি ও সংস্কার করে নিচ্ছেন।
নিজ তুলন্দর গ্রামের কৃষক আব্দুল বারেক জানান, কাঁচির পাশাপাশি কোদালেরও অনেক কাজ রয়েছে। কোদাল দিয়ে ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান বের করা, ধান শুকানোর খলা তৈরি, এবং রোব ফসলের জমিতে পানি সরবরাহের ড্রেন নির্মান কাজে এর ব্যবহার খুব বেশি।
উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের কামার একাদুল বলেন, ঈদ আর আমন মৌসুম আমাদের আশীর্বাদ স্বরূপ। এ সময় আমরা কাজের যে অর্ডার পাই বা রেডিমেট দা কাঁচি কোদাল ছুরি বিক্রি করে থাকি তার আয় দিয়েই আমাদের সারা বছরের একটা বড় রকমের আর্থিক সঞ্চয় হয়ে থাকে। আমন মৌসুমে একজন কামার শিল্পী নিচে ৭০ হাজার থেকে ৮০/৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন।
অপরদিকে খৈরাটি গ্রামের কুটির শিল্পী আব্দুল গণি জানান, বাঁশের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় ডালা চালুন কুলার মূল্য এবার কিছুটা বেড়ে গেছে। বাজারের অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রীর তুলনায় কুটির শিল্প পণ্যের মূল্য এখনো সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে।
শিমরাই গ্রামের কুটির শিল্পী রফিকুল ইসলাম জানান, সারা বছর আমাদের ব্যবসা ঢিমেতালে চলে। আমন মৌসুম এলে আমাদের পণ্য সামগ্রী বেচা-কেনা বাড়ে। অগ্রহায়ণ থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত ২মাসে যে আয় হয় তা দিয়ে সারা বছরের আমাদের সংসার খরচ কোন রকমে চলে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা একটি কুলা ৫০টাকা, ডোলা ৪০টাকা, শলার তৈরি খাদি ৮০টাকা, চালুন ৩৫টাকা, বড় ডুলি ৭শ থেকে ৮শ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার ১৯হাজার ১শ ১৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও অর্জিত হয়েছে ১৯হাজার ২শ ৭৫ হেক্টর। এবার ৮৭ জাতের আবাদ ও ফলন বেশি হাওয়ায় কৃষকরা খুব খুশি।