অনলাইন ডেস্ক :
ইরানের ব্যাপক অংশ জুড়ে অসন্তোষ বাড়ছে এবং সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ ক্রমেই আরও সহিংস হয়ে উঠছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীরা পশ্চিম ইরানে কুর্দি সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি শহরের বড় অংশ বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে দখল করে রেখেছিলছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা বলছে, শহরটি থেকে অনেক সরকারি কর্মকর্তা পালিয়ে গেছেন এবং নিরাপত্তা বাহিনী সেখান থেকে পিছু হটছে। রাতের এক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ইরাক সীমান্তের নিকটবর্তী ওশনাভিয়েহ শহরের বেশিরভাগ অংশ বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে। বিবিসির এক সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, শহরের মানুষের কাছে তিনি জানতে পেরেছেন, শহরটি থেকে অনেক সরকারি কর্মকর্তা পালিয়ে গেছেন এবং নিরাপত্তা বাহিনী সেখান থেকে পিছু হটছে। ওশনাভিয়েহ শহরের বিক্ষোভকারীরা দাবি করছেন কয়েকদিন ধরে সহিংস সংঘাতের পর নিরাপত্তা বাহিনীকে তারা শহরছাড়া করেছেন। যদিও সরকারি একটি সংবাদ সংস্থা বলছে শহরের নিয়ন্ত্রণ এখনও সরকারি বাহিনীর হাতেই রয়েছে। সবশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী আবার শহরে তাদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছে। কুর্দিস্তানের সীমান্তবর্তী ওশনাভিয়েহ শহর থেকে সামাজিক মাধ্যমে যে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, বিক্ষোভকারীদের বিশাল দল শহরের রাস্তা দিয়ে মিছিল করে যাচ্ছে, সেখানে কোন পুলিশ নেই এবং জোর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
অসন্তোষ বাড়ছে ইরানে ৮০টির বেশি শহর জুড়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারী এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ ক্রমেই আরও সহিংস হয়ে উঠছে। বিবিসির ইরান সংবাদদাতা কাসরা নাজি জানাচ্ছেন, বিক্ষোভের সপ্তম দিনে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা অনেক ভিডিওতে পুলিশকে বিক্ষোভ সমাবেশের ওপর সরাসরি গুলি চালাতে দেখা গেছে। কোন কোন ভিডিওতে উত্তর পশ্চিমের পিরানশাহর, মাহাবাদ আর উর্মিয়া শহরে নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের ওপর তাজা গুলি চালাতে দেখা গেছে। রাজধানী তেহরানে হাজার হাজার মানুষ, যাদের বেশিরভাগই নারীকে নিরাপত্তা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ করতে দেখা যাচ্ছে এবং তারা দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন। নিরাপত্তা হেফাজতে মাশা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুর পর থেকে ইরান জুড়ে বিক্ষোভ চলছে, এই তরুণী পোশাক সংক্রান্ত বিধিনিষেধ ভঙ্গ করেছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। পুলিশি হেফাজতে থাকার পর হাসপাতালে এই তরুণীর মৃত্যু ঘটে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে তাকে মারধরের অভিযোগ করা হয়, যে অভিযোগ কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ বহু ইরানি টানা অষ্টম দিন দেশব্যাপী প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছে। ইরানের সরকারি গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভে এপর্যন্ত ৩৫ জন নিহত হয়েছে। পুলিশ বলছে, প্রতিবাদ শুরু হবার পর থেকে সারা দেশে সাতশ’য়ের ওপর মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যারা তার ভাষায় দেশের নিরাপত্তা ও শান্তি বিঘিœত করছে তাদের দমন করা হবে। কিন্তু সেটা হয়ত কঠিন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু