April 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, February 26th, 2023, 9:00 pm

উদ্বোধনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি মহিপুরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি

জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী (কলাপাড়া) :

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মৎস্য বন্দর মহিপুরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি উদ্বোধন হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি এটি। আধুনিক এ বিক্রয় কেন্দ্রে রয়েছে ট্রলার থেকে মাছ নামানোর জন্য পন্টুন ও গ্যাংওয়ে। এছাড়া রয়েছে অকশন শেড, প্যাকেজিং শেড, আড়তদার কক্ষ, বরফকল, জেনারেটর কক্ষ, অফিস ভবন, পয়োনিষ্কাশনসুবিধা, মাছ পরিবহনের জন্য ট্রাকস্ট্যান্ড ও আবাসিক কোয়ার্টার। এসব কোনটাই কাজে আসছেনা মৎস্য ব্যবসায়িসহ জেলেদের। এমনকি লোকবলও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সামনের গেটে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। ভেতরে সুনসান নীরবতা। তবে সেটির আয়তন কম এবং আড়তদারদের জায়গা সংকট থাকায় সেখানে যেতে আগ্রহী না ব্যবসায়ীরা। এর ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করর্পোরেশন ২০১২ সালে বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী শিববারিয়া নদীর দুই পাড়ে মৎস্য বন্দর মহিপুর ও আলীপুরে দু’টি মৎস্য বিক্রয় কেন্দ্রের নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এরপর জমি অধিগ্রহণে সময় লাগে চার বছর। জমির মূল্যসহ ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে ১ একর ৯ শতাংশ জমির ওপর ২০১৬ সালে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। অপরটি ১৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ১ একর ১০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিন করা হয়। এরপর ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র দু’টির উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তবে আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি চালু হয়েছে। বর্তমানে ক্রেতা, বিক্রেতা ও পাইকারদের হাকডাকে মুখরিত রয়েছে। কিন্তু এর পুরো উল্টো চিত্র মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রেটির।
মহিপুর মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সূত্রে জানা যায়, মহিপুর মৎস্য সমিতির রেজিস্ট্রার সদস্য রয়েছে ৮১ জন। আরো ২৫ জন আনরেজিস্ট্রার সদস্য রয়েছে। এ অবতরণ কেন্দ্রে জায়গা হচ্ছে মাত্র ৪০ থেকে ৪২ জনের।
মহিপুরের মৎস্য ব্যবসায়িরা বলেছেন, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি উদ্বোন হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এটির আয়তন কম। সব আড়ৎদারদের জায়গা দিতে পারছেনা। তাই ব্যবসায়ীরা কেউই এ বিক্রয় কেন্দ্রটিতে যেতে আগ্রহী হচ্ছেনা। এছাড়া স্থানীয় জেলেরাও সেখানে যাচ্ছেন না।
ট্রলার মালিক মো.তাসির মাঝি বলেন, অবতরন কেন্দ্রটিতে কোন আড়ৎদার নেই। তাই ওখানে তারা যাচ্ছেনা। একই কথা বলেছেন, মো.আসাদ মাঝি, ইব্রাহীম হাওলাদার। আড়ৎদাররা এখানে আসলে তারা আসবেন বলে ওইসব সমুদ্রগামী জেলেরা জানান।
মহিপুর ফয়সাল ফিস’র মালিক ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.ফজলু গাজী জানান, মৎস্য অবতরন কেন্দ্রটিতে আড়ৎদারদের তুলনায় অর্ধেক রুমও নাই। যার কারণে সেখানে ব্যবসায়িরা যাচ্ছেনা।
মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম বলেন, ট্রলার মালিক, জেলে, আড়ৎদার, পাইকাররা এক ছাদের নিচে বসেই মাছ কেনাবেচা এবং রপ্তানি করতে চায়। কিন্তু অবতরন কেন্দ্রটি আয়তন ছোট হওয়ার কারনে ওখানে কোন মৎস্য ব্যবসায়িরা যায়নি। এটির পরিধি বৃদ্ধি করা হলে সব ব্যবসায়িরাই যাবে। তাহলেই মহিপুর মৎস্য বিক্রয় কেন্দ্রটি জমজমাট হয়ে উঠবে।
মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার মো.শাকিল আহম্মেদ বলেন, মহিপুর মৎস্য বন্দর নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। তাদের দাবির বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি মৎস্য বিক্রয় কেন্দ্রটির কার্যক্রম শ্রীঘ্রই চালু হবে হলে তিনি জানান।