April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, May 29th, 2023, 9:50 pm

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর অধিকাংশ অ্যাম্বুলেন্সই অকেজো

ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :

দেশের অধিকাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সই অকেজো। সংকটাপন্ন রোগীদের পরিবহনের জন্য সারা দেশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাগজ-কলমের হিসাবে হাজারের বেশি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও বাস্তবে অধিকাংশই অ্যাম্বুলেন্সই অচল। ফলে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স কিংবা অন্য যানবাহনের ওপর রোগীদের নির্ভর করতে হচ্ছে। আর এ অচলাবস্থার জন্য মূলত চালক পদে নিয়োগ না থাকা, যান্ত্রিক ত্রুটি, অব্যবস্থাপনা, নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের অবহেলা দায়ি। অথচ দেশের তৃণমূলের মানুষের ভরসা হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের ৪৯২ উপজেলার মধ্যে ৪২৭টিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে। ওসব হাসপাতালে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে ১ হাজার ৬৯টি। তার মধ্যে সচল ৫৪৯টি। বাকি ৫২০টির মধ্যে মেরামত যোগ্য অচল ৩১৪টি ও মেরামত অযোগ্য অচল ২০৬টি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় একটি করে অ্যাম্বুলেন্স চালকের পদ রয়েছে। তবে কিছু হাসপাতালে চালকের পদ শূন্য। দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ।

সূত্র জানায়, বিভাগভিত্তিক হিসাবে ঢাকার ৭৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সবচেয়ে বেশি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। বিভাগটিতে ১১৯টি সচল অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। তবে আট বিভাগের মধ্যে অচল অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যাও এ বিভাগে সবচেয়ে বেশি। মেরামত যোগ্য অচল ৬৬টি আর মেরামত অযোগ্য অচল ৩৮টি। আর রাজশাহীর ৫৯ উপজেলা হাসপাতালে সচল অ্যাম্বুলেন্স ৮৪টি, মেরামত যোগ্য অচল ৪২টি ও মেরামত অযোগ্য অচল ৩৪টি; সিলেট বিভাগে ৩৬ উপজেলা হাসপাতালে ৪১টি সচল অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও মেরামত যোগ্য অচল ২৪টি আর মেরামত অযোগ্য অচল ১৫টি; খুলনা বিভাগের ৫০ উপজেলা হাসপাতালে ৬১টি সচল অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। এ বিভাগে মেরামত যোগ্য অচল ৩৩টি ও মেরামত অযোগ্য অচল ১৭টি। বরিশাল বিভাগে ৩৫টি উপজেলা হাসপাতালে সচল ৪৯টি, মেরামত যোগ্য অচল ১৩টি ও মেরামত অযোগ্য অচল ২১টি অ্যাম্বুলেন্স। চট্টগ্রাম বিভাগের ৯২টি উপজেলা হাসপাতালে ১০০ সচল অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি মেরামত যোগ্য অচল ৬০টি এবং মেরামত অযোগ্য ২৯টি, ময়মনসিংহ বিভাগের ২৯ উপজেলা হাসপাতালে ৩৩টি সচল অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও মেরামত যোগ্য অচল ২৯ ও মেরামত অযোগ্য অচল ২৩টি। রংপুর বিভাগের ৫০ উপজেলা হাসপাতালে সচল অ্যাম্বুলেন্স ৬২টি। এ বিভাগে মেরামত যোগ্য অচল ৪৭টি ও মেরামত অযোগ্য অচল অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা ২৯টি। সূত্র আরো জানায়, উপজেলা বা জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোয় অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হলে তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মেরামত করতে পারেন।

মেরামত করার জন্য অ্যাম্বুলেন্সপ্রতি উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় কর্মকর্তার ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকার ক্ষমতা রয়েছে। এর বেশি হলে সরকারি হাসপাতালের যন্ত্রপাতি মেরামতের দায়িত্বে নিয়োজিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল ইলেকট্রো মেডিকেল ইকুইপমেন্ট মেইন্টেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (নিমিও অ্যান্ড টিসি) মেরামত করে দেয়। সেক্ষেত্রে বিআরটিএর অনুমোদন প্রয়োজন। যেসব অ্যাম্বুলেন্স মেরামত অযোগ্য, সেগুলো যথাযথ নিয়ম মেনে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কমিটি নিলাম করে দেয়া হয়। কিছু অ্যাম্বুলেন্স ২০০০ সালেরও আগের। সেগুলো মেরামত করে চালানো হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও নতুন অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছি। আগের অ্যাম্বুলেন্সগুলোয় রক্ষণাবেক্ষণ ও জ¦ালানি ব্যয় অনেক বেশি। এদিকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স থেকে শুরু করে যন্ত্রপাতি নষ্ট হলে তা মেরামত করে নিমিও অ্যান্ড টিসি। বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যলয় নেই, পর্যাপ্ত লোকবলও নেই। ফলে দীর্ঘ হয় মেরামত প্রক্রিয়া। আর সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সেবা না পেলে রোগীর ওপর চিকিৎসা ব্যয়ের বোঝা বাড়ে।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম জানান, যেসব অ্যাম্বুলেন্স মেরামত অযোগ্য, সেগুলো হিসেবেই আসবে না। সরকারি সম্পত্তি অচল হয়ে গেলে তা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় বাতিল করা হয়। আর যেগুলো মেরামত যোগ্য অচল, সেগুলোকে সচল করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সব সময়ই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়ে থাকে।