November 3, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, December 6th, 2023, 8:34 pm

উষ্ণতম বছরের স্বীকৃতি পেল ২০২৩

অনলাইন ডেস্ক :

মানবজাতির ইতিহাসে চলতি বছর উষ্ণতার সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। কার্বন নির্গমনের রেকর্ডও ২০২৩ সালের ঝুলিতে যাচ্ছে। অন্য একটি প্রতিবেদনে বিপর্যয়ের শৃঙ্খল সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ধাক্কা শুধু বিজ্ঞানীদের নথিপত্রে সীমাবদ্ধ নেই, তার প্রমাণ হাতেনাতে পাওয়া যাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সাল এখনো পর্যন্ত উষ্ণতম নথিভুক্ত বছর হিসেবে গণ্য করতে হবে। চলতি বছর পরপর ছয় মাস সেই রেকর্ড ভাঙার পর ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্তও অপেক্ষা করতে হলো না। শুধু ডিসেম্বর মাসে পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে ইউরোপের সেই প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে।

মার্কিন জলবায়ু সংস্থা ২০২৩ সালে আগের রেকর্ড ভাঙার পূর্বাভাস দিয়েছিল। উল্লেখ্য, ১৮৫০ সাল থেকে তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা হচ্ছে। এর আগে ২০১৬ সালকে উষ্ণতম বছর হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশিত হওয়ার ফলে দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে শীর্ষ নেতাদের ওপর আরো চাপ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার সম্মেলনে ‘গ্লোবাল কার্বন বাজেট’-এর বাৎসরিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন বেড়েই চলেছে।

নির্গমনের মাত্রা ২০২৩ সালে তিন হাজার ৬৮০ কোটি টন হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনটা হলে ২০২২ সালের রেকর্ডও ভেঙে যাবে। সে ক্ষেত্রে ২০২৩ সালে আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধির মাত্রা দাঁড়াবে ১.১ শতাংশ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় ১.৪ শতাংশ। কোপার্নিকাসের প্রধান কার্লো বুয়নটেম্পো বলেন, যতকাল গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বেড়ে চলবে, ততকাল চলতি বছরের তুলনায় ভিন্ন ফল প্রত্যাশার কোনো অবকাশ নেই। তাঁর মতে, তাপমাত্রা বেড়েই চলবে এবং সেই সঙ্গে তাপপ্রবাহ এবং খরাও বাড়বে।

যত দ্রুত সম্ভব নির্গমনের মাত্রা শূন্যে আনাই জলবায়ুর ঝুঁকি সামলানোর কার্যকর উপায়। দুবাইয়ে জাতিসংঘের ২৮তম জলবায়ু সম্মেলনে একের পর এক এমন সতর্কবাণী শোনা যাচ্ছে। বুধবারই (৬ ডিসেম্বর)গবেষকরা গোটা পৃথিবী জুড়ে বিপর্যয়ের শৃঙ্খলের অভূতপূর্ব ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন। দৃশ্যমান নয়, পৃথিবীর এমন ‘ট্রাপওয়্যার’ পর্যবেক্ষণ করেই তাঁরা এমন সিদ্ধান্তে এসেছেন। সেই প্রতিবেদনে ২৬টি বিপজ্জনক প্রবণতার উল্লেখ করা হয়েছে। মানুষের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়নকেই এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হয়েছে।

এভাবে পৃথিবীর ইকোসিস্টেম প্রায় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতে, এই বিপজ্জনক প্রবণতা মোকাবেলার কোনো সুযোগ নেই। একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটলে সবকটি সামলানো মানুষের পক্ষে কঠিন হবে বলে প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে অন্যতম প্রধান রচয়িতা টিম লেন্টন সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, মানবজাতি এর আগে কখনো এমন বড় মাত্রার হুমকির মুখে পড়েনি। তবে এখনো প্রায়শ্চিত্তের কিছু কিছু সুযোগ আছে বলে তিনি মনে করেন। ইলেকট্রিক গাড়ি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্যের মতো প্রবণতা বিপদ কাটাতে সহায়তা করতে পারে।