April 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, September 23rd, 2022, 7:28 pm

উয়েফা নেশন্স লিগে টিকে থাকার আশায় ফ্রান্স

অনলাইন ডেস্ক :

অস্ট্রিয়াকে হারিয়ে তলানি থেকে উঠে এলো ফ্রান্স। কিলিয়ান এমবাপে ও অলিভিয়ে জিরুদের নৈপুণ্যে বাঁচিয়ে রাখল উয়েফা নেশন্স লিগের শীর্ষ স্তরে টিকে থাকার আশা। প্যারিসে জাতীয় স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ‘এ’ লিগের ১ নম্বর গ্রুপের ম্যাচটি ২-০ গোলে জিতেছে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। গত জুনে প্রথম লেগে অস্ট্রিয়ার মাঠে প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়ার পর শেষ দিকে এমবাপের গোলে হার এড়িয়েছিল ফ্রান্স। এবার তার গোলেই এগিয়ে গেল তারা। পরে ব্যবধান বাড়ালেন জিরুদ। পাঁচ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে ফ্রান্স। সেই সঙ্গে বাঁচিয়ে রেখেছে প্রতিযোগিতাটির আগামী আসরেও শীর্ষ স্তরে খেলার সম্ভাবনা। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি লিগের প্রতিটি গ্রুপের তলানির দলকে নেমে যেতে হবে নিচের সারির লিগে। ফলে, আগামী রাউন্ডে নিশ্চিত হবে ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ার (৪ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে) মধ্যে কারা টিকে থাকবে আর কারা নেমে যাবে ‘বি’ লিগে। চোটের ছোবলে দীর্ঘ সময়ের জন্য ছিটকে গেছেন পল পগবা। কিছুদিন আগে একই কারণে মাঠের বাইরে চলে যান করিম বেনজেমা। এই দুইজন সহ চোটের ধাক্কায় নিয়মিত সদস্যের অনেককে ছাড়া খেলতে নামে ফ্রান্স। তার মধ্যে বিশেষভাবে ফুটে ওঠে আক্রমণভাগে রিয়াল মাদ্রিদ তারকার শূন্যতা। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে জোরাল শটে জালে পাঠান এমবাপে। তবে বাজে অফসাইডের বাঁশি। শুরুতেই প্রতিপক্ষ শিবিরে ভীতি ছড়ানোর পর একের পর এক আক্রমণ করে ফরাসিরা, সুযোগও আসতে থাকে। কিন্তু মিলছিল না গোল। ২৬তম মিনিটে দারুণ নৈপুণ্যে সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করেও শেষটায় গড়বড় করে ফেলেন এমবাপে। ডি-বক্সে ঢোকার মুখে জিরুদের সঙ্গে ওয়ান টু খেলে দুই ডিফেন্ডারের মধ্যে দিয়ে আরেকটু এগিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে দুর্বল শট নেন পিএসজি তারকা। পরের মিনিটে আবারও হতাশ করেন তিনি, এবার তার কোনাকুনি শট লক্ষ্যে ছিল না। প্রবল চাপের মুখে নিজেদের অর্ধ ছেড়ে বেরই হতে পারছিল না অস্ট্রিয়া। ৩৫তম মিনিটে ডাবল সেভে সমতা ধরে রাখেন তাদের গোলরক্ষক পাত্রিক পেনৎস। মোনাকোর ডিফেন্ডার বেনোয়া বাদিয়াশিলার ওভারহেড কিক কোনোমতে লাফিয়ে ঠেকান তিনি, বল তার গ্লাভসে ছুঁয়ে ক্রসবারে লাগে। এরপর আলগা বল পেয়ে অঁতোয়ান গ্রিজমানের প্রচেষ্টাও ফিরিয়ে দেন পেনৎস। বিরতির আগে গতিতে ভীতি ছড়ান এমবাপে। সবাইকে পেছনে ফেলে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষককেও কাটান তিনি। কিন্তু দুরূহ কোণ থেকে শট নেওয়ার জায়গা করতে পারেননি, পাস বাড়ান বক্সের মাঝামাঝি। লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নিয়ে হতাশা বাড়ান মিডফিল্ডার ইউসুফ ফোফানা। এই অর্ধের খেলা কতটা একপেশে ছিল তার পরসংখ্যানেও ফুটে ওঠে পরিষ্কারভাবে। প্রায় ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে একচেটিয়া আক্রমণে গোলের উদ্দেশ্যে ১৫টি শট নেয় ফ্রান্স, যার চারটি ছিল লক্ষ্যে। আর ঘর সামলাতে ব্যস্ত অস্ট্রিয়া শট নিতে পারে মাত্র একটি, সেটাও লক্ষ্যভ্রষ্ট। তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে অত বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি স্বাগতিকরা। তবে গোলের দেখা মিলে যায় এই অর্ধের শুরুতেই। ৫৬তম মিনিটে চমৎকার গোলে দলকে এগিয়ে নেন এমবাপে। জিরুদের পাস ধরে একজনকে কাটিয়ে আরেক জনের বাধা এড়িয়ে বক্সে ঢুকে জোরাল শটে গোলটি করেন পিএসজির হয়েও দারুণ ছন্দে থাকা এই ফরোয়ার্ড। ৬৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন জিরুদ। ডান দিক থেকে গ্রিজমানের দারুণ ক্রস ডি-বক্সে পেয়ে লাফিয়ে হেডে ঠিকানা খুঁজে নেন এসি মিলান স্ট্রাইকার। বাকি সময়ে কেউই নিশ্চিত আর কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। তবে ফ্রান্স ঠিকই তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছে। শিরোপাধারী হিসেবে আসর শুরু করে প্রথম চার রাউন্ডের হতাশাজনক ফলে (দুটি করে হার ও ড্র) ফাইনালসে ওঠার লড়াই থেকেই কেবল ছিটকে যায়নি ফ্রান্স, বিশ্বকাপের বছরে তাদের সাদামাটা পারফরম্যান্স নিয়ে জাগে শঙ্কা। কোচ দিদিয়ে দেশমের জন্য সবচেয়ে বড় দুর্ভাবনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, যথেষ্ট গোল না পাওয়া। প্রথম চার ম্যাচে মাত্র ৩ বার জালের দেখা পেয়েছিল তারা। এবারের আক্রমণাত্মক ফুটবলের পাশাপাশি গোলের দেখাও মেলায় চিন্তা কিছুটা হলেও দূর হলো। এই গ্রুপের শীর্ষে থেকে ফাইনালসে ওঠার লড়াইটাও বেশ জমে উঠেছে। দিনের আরেক ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া নিজেদের মাঠে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে ডেনমার্ককে। পাঁচ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে এখন শীর্ষে ক্রোয়াটরা। ১ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে ডেনিশরা। শেষ রাউন্ডে ক্রোয়েশিয়া খেলবে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে আর ডেনমার্ক মুখোমুখি হবে ফ্রান্সের।