November 22, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, May 9th, 2024, 7:49 pm

এক ম্যাচ হারলেই কথা পরিবর্তন হয়ে যাবে: তাসকিন

অনলাইন ডেস্ক :

একে তো সামনের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। তার ওপর বাংলাদেশের বিপক্ষে এই সিরিজে তেমন চ্যালেঞ্জও জানাতে পারছে না তারা। সব মিলিয়ে ‘ফেইক কনফিডেন্স’ অর্জনের সেই পুরোনো শঙ্কা উঁকি দিতে শুরু করেছে আবার। তবে তাসকিন আহমেদ তুলে ধরলেন তাদের উভয় সঙ্কটের কথা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতলে সেটাকে যেমন পাত্তা দেন না অনেকে, কিন্তু হেরে গেলে তো মহাবিপদ, মাথায় ভেঙে পড়বে পাহাড়! হারার মতো অবস্থা অবশ্য এখনও হয়নি একবারও। প্রথম তিন ম্যাচ জিতে এরইমধ্যে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলেছে বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচে তো লড়াই জমাতেই পারেনি জিম্বাবুয়ে। বাকি একটিতে কেবল একটু লড়াই তারা করতে পেরেছে শেষ দিকে।

তবে বাংলাদেশের এই জয়েও সঙ্গী অনেক প্রশ্ন। তিন ম্যাচে তেমন ভালো কিছু করতে পারেনি বাংলাদেশের টপ-অর্ডার। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তিনবার জীবন পেয়ে ৬৭ রান করেন তানজিদ হাসান। পরের দুই ম্যাচে ব্যর্থ তিনি। লিটন কুমার দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট তো একরকম ঘুমিয়েই আছে। বোলিংয়ে শুরুটা ভালো করলেও তিন ম্যাচেই পরের দিকে কমে গেছে কার্যকারিত। নিখুঁতভাবে কাজ শেষ করতে পারেননি বোলাররা এক ম্যাচেও। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এমন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই জন্ম নিচ্ছে নানা আলোচনা।

অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান কদিন আগে বলেছেন, বিশ্বকাপের আগে জিম্বাবুয়ে বা যুক্তরাষ্ট্র দলের সঙ্গে খেলা আদর্শ প্রস্তুতি নয়। একই সঙ্গে তিনি তুলে ধরেছেন, ২০২২ বিশ্বকাপের আগে নিউ জিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলাটা দলের জন্য কতটা উপকারী ছিল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টির আগে বৃহস্পতিবার মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে তাসকিনের কাছে জানতে চাওয়া হলো এসব নিয়েই। অভিজ্ঞ পেসার তুলে ধরলেন কন্ডিশনের ভিন্নতার কথা। “ফেইক কনফিডেন্স নাৃ. আসলে যে কোনো জায়গায়ই ভালো করতে পারলে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। হয়তো কন্ডিশনের দিক থেকে… আমরা এখনও জানি না যুক্তরাষ্ট্রে কোন কন্ডিশনে খেলা হবে। বেশিরভাগ ড্রপ-ইন উইকেটে খেলা হতে পারে। আমাদের বেশিরভাগ ক্রিকেটারের যুক্তরাষ্ট্রে খেলার অভিজ্ঞতা কম। ওখানে গিয়ে নতুনভাবে মানিয়ে নিতে হবে।”

“আমরা বাংলাদেশে খেলি, খেলতেও হবে। কন্ডিশন তো আমরা বদলে ফেলতে পারব না। আরেকটু স্পোর্টিং কন্ডিশন হলে হয়তো আরেকটু ভালো হতো। তবে আমাদের এখনও কিন্তু ভালো ক্রিকেট খেলতে হচ্ছে। আরেকটা বিষয় হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রে যাব, নতুনভাবে মানিয়ে নিতে হবে। একটা ভালো দিক হলো, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তিনটা ম্যাচ খেলব। সেখান থেকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য পাওয়া যেতে পারে।” তবে জিম্বাবুয়ে সিরিজটি যে বিশ্বকাপে চোখ রেখেই খেলছে বাংলাদেশ, সেটি মেনে নিয়েছেন তাসকিন। একইসঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই সিরিজে কোনো ম্যাচে নেতিবাচক ফল জন্ম দেবে ভিন্নরকম আলোচনা। “আসলে যতই কথা হচ্ছে জিম্বাবুয়ে নিয়ে, আবার যদি একটা ম্যাচ হেরে যাই তখন কিন্তু আবার অন্যরকম কথা হবে। জিতলে কৃতিত্বটা কম পাই আমরা ছোট দলের সঙ্গে খেললে। হারলে কিন্তু সবাই বলবে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে হেরে গেছে।”

“দুর্ভাগ্যবশত আমাদের অনেক কথাই শুনতে হয়। কিন্তু যখন খেলতে নামি, যে প্রতিপক্ষই হোক, সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করি। হ্যাঁ, কখনও ভালো বা কখনও খারাপ হয়। কিন্তু এই উন্নতির ধারাটা রেখে সবাই খেলার চেষ্টা করি। সবার মধ্যে এটাই লক্ষ্য বিশ্বকাপে কীভাবে ভালো করা যায়। এই লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছি, অনুশীলন করছি।” চট্টগ্রামে প্রথম তিন ম্যাচে দারুণ বোলিং করেছেন তাসকিন। সব মিলিয়ে ওভারপ্রতি স্রেফ ৪.৪১ রান খরচায় তিনি নিয়েছেন ৬টি উইকেট। লম্বা সময় পর দলে ফেরা মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের তিন ম্যাচে শিকার ৭ উইকেট। অফ স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান, লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনরাও করেছেন ভালো বোলিং। ব্যাটিংয়ে তিন ম্যাচেই সফল তাওহিদ হৃদয়।

কিন্তু প্রথম ম্যাচের পর থেকে ব্যর্থ টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানই। বোলারদের কারণেই মূলত এর প্রভাব পড়েনি কোনো ম্যাচের ফলে। তবু লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্তদের এমন ফর্ম যে চিন্তার কারণ তা মানেন তাসকিন। তার বিশ্বাস, শেষ দুই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবেন ব্যাটসম্যানরা। “ব্যাটিং বা যেদিনই যেটা খারাপ হয়, দর্শক বা বাইরের যে কারও চেয়ে আমরাই বেশি হতাশ হই সবার আগে। কারণ দিন শেষে আমাদের খেলতে হয়। আমরা কিন্তু ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি কীভাবে আমাদের ব্যাটিং বা বোলিং আরও উন্নতি করা যায়। এটা আমরাও বুঝতে পারছি প্রত্যাশামাফিক শুরু হচ্ছে না। এটা নিয়ে কাজ হচ্ছে।

আসলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা ছাড়া কিছুই হাতে নেই। চেষ্টা করে যাচ্ছি, আশা করি সামনে ভালো কিছু হবে। এই দুই ম্যাচেও আগের ম্যাচগুলো থেকে ভালো হবে ব্যাটিং।” মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। খেলা শুরু সন্ধ্যা ৬টায়।