November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, December 3rd, 2021, 8:18 pm

এখনো রিটার্ন জমা দেয়নি অধিকাংশ করদাতা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এখনো রিটার্ন জমা দেয়নি অধিকাংশ করদাতা। অথচ ইতিমধ্যে আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী রিটার্ন দাখিল করার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেছে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)বিশেষ বিবেচনায় ব্যক্তি শ্রেণীর আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। নির্ধারিত সময় ৩০ নবেম্বর পেরিয়ে গেলেও ৭৯ শতাংশ করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেনি। সংখ্যার হিসাবে যার পরিমাণ ৫৫ লাখ ৫০ হাজার ৪৬৯। মাত্র প্রায় ২১ শতাংশ টিআইএনধারী করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছে। এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রিটার্ন জমার শেষ দিন অর্থাৎ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৪ লাখ ৪৯ হাজার ৫৩১ জন করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছে। যার বিপরীতে আয়কর এসেছে ১ হাজার ২৫০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। আর ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৮৬টি সময় বৃদ্ধি আবেদন জমা পড়েছে। দেশের ৩১টি কর অঞ্চলের মধ্যে খুলনার কর অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন জমা পড়েছে। ওখানে ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৮৭ জন করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছে এবং সেখানে কর আহরণ হয়েছে ৬৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা। আর ঢাকার বৃহৎ করদাতা ইউনিটে সবচেয়ে কম ২৩৩টি রিটার্ন দাখিল হয়েছে। যার বিপরীতে কর এসেছে ১০৫ কোটি ৫ লাখ টাকা। দেশে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন করা করদাতা ৭০ লাখেরও বেশি। অথচ ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত ৫৫ লাখ ৫০ হাজার ৪৬৯ করদাতাই রিটার্ন দাখিল করেননি। সময় বৃদ্ধির আবেদন ও রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা যোগ করলেও ১৬ লাখ ৬ হাজার ১০৭ জন করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছে বা রিটার্ন দাখিলে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ বাকি ৫৩ লাখ ৯৪ হাজার ৯৮৩ করদাতা হিসাবের বাইরে রয়েছে।
সূত্র জানায়, এনবিআরের নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ই-রিটার্নে বেশ ভাল সাড়া মিলছে। অক্টোবর মাসে পরীক্ষামূলক চালু হওয়া অনলাইন মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছে। আর নিবন্ধন নিয়েছে ৯০ হাজার করদাতা। তার আগে ২০২০-২১ করবর্ষে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ ৪২ হাজার করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছিল। তখন রিটার্ন দাখিলের জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন জমা পড়েছিল ১ লাখ ৫০ হাজারটি। যদিও সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে ২৪ লাখ করদাতার আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছিল।
সূত্র আরো জানায়, করোনা মহামারী বিবেচনায় চলতি বছরে আয়কর মেলা না হলেও এনবিআরের আওতাধীন সারাদেশে ৩১টি কর অঞ্চলে ১ নবেম্বর থেকে মেলার মতো সেবা দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি কর অঞ্চলে জোন ভিত্তিক বুথ, ই-টিআইএন ও তথ্য সেবা বুথ রাখা হয়েছে। ৩০ নবেম্বর কর অঞ্চলগুলোতে করদাতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তাই করসেবায় রাত ৮টা পর্যন্ত কর অফিসগুলো খোলা রাখা হয়েছিল।
এদিকে এনবিআরের আয়কর বিভাগ সংশ্লিষ্টদের মতে, চূড়ান্ত হিসাবে রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা আরো অনেক বেশি হবে। তাছাড়া নতুন করে সময় বৃদ্ধি ও জরিমানা দিয়ে রিটার্ন দাখিলের আবেদন বিবেচনা করলে জানুয়ারি মাস গিয়ে রিটার্ন দাখিল ২৫ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
অন্যদিকে সার্বিক বিষয়ে এনবিআর সদস্য (করনীতি) মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। চূড়ান্ত হিসাব পাওয়া না পর্যন্ত কত শতাংশ করদাতা রিটার্ন দাখিল করেছে কিংবা করেনি তা বলা যাবে না। আশা করা যায় করদাতাদের রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়বে। তার আগে ব্যবসায়ী ও করদাতাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিনে জমা দেয়ার সময় আরো এক মাস বৃদ্ধি করে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করার ঘোষণা আসে।