ইতালির রাজধানী রোমে খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে ‘বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কক্ষ’ এর উদ্বোধন করা হয়।
সোমবার ইউএন ফুড সিস্টেমস সামিট+২ স্টকটেকিং মোমেন্টে (ইউএনএফএসএস+২) যোগ দিতে রোম সফরে থাকা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্ষটির উদ্বোধন করেন। এফএও’র মহাপরিচালক কিউ ডংইউ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত জাতি গঠনের স্বপ্ন দেখা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং বাংলাদেশের কৃষি খাতে ‘সবুজ বিপ্লব’ এর সূচনা করার লক্ষ্যে এই কক্ষটি স্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তার দেশ এফএও সদর দপ্তরে বাংলাদেশের একটি ছোট অংশ পেয়ে আনন্দিত।
পুরো বিষয়টি সম্ভব করায় তিনি মহাপরিচালক ও তার দলের প্রতি সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে এফএও’র সদস্য পদ লাভ করে।
বাংলাদেশের মানুষকে নিপীড়ন, দারিদ্র্য ও ক্ষুধা থেকে মুক্ত করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবন মিশন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি, যেহেতু আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে তার নাম সম্বলিত কক্ষটির উদ্বোধন করছি।’
তিনি আরও বলেন যে বাংলাদেশ ও এফএও’র মধ্যে ৫০ বছরের চমৎকার অংশীদারিত্বেরও প্রতীক এই কক্ষ।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ক্ষুধা ও অপুষ্টি মোকাবিলায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। সব মানুষের জন্য ক্ষুধামুক্ত এবং দারিদ্র্যমুক্ত ভবিষ্যত নিশ্চিত করা আমার জীবনের লক্ষ্য এবং আমরা আমাদের সংগ্রামের প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি এই কক্ষে সমবেত আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা আমাদের অর্জনগুলোর দিকে দৃষ্টি দিতে কিছুটা সময় ব্যয় করবেন। আমি আশা করি তারা সারা বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তা এবং এর স্থায়িত্ব প্রচারে আমাদের উদাহরণ থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করবে।’
নবনির্মিত কক্ষটিতে বাংলাদেশের এক কৃষকের ধানখেতে চিত্রিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের একটি প্রতিকৃতি দেখানো হয়েছে। ২০২০-২০২১ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ পালনের সময় ধানখেতে এই শৈল্পিক কাজটি করা হয়। এটি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নেয়। এটি আমাদের সাধারণ মানুষের হৃদয় ও মনে বঙ্গবন্ধুর স্থানের সাক্ষ্য বহন করে।
শেখ হাসিনা বলেন যে ক্ষুধা ও অপুষ্টির বিরুদ্ধে তাদের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯৯ সালে তাকে দেওয়া সেরেস অ্যাওয়ার্ডের একটি চিত্রও রয়েছে। যা বাংলাদেশের কৃষক ও খেতমজুরদের কঠোর পরিশ্রমের প্রতি উপযুক্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি।
গত মাসে তার জেনেভা সফরে বাংলাদেশের শ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য বক্তব্য রেখেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবার আমি এখানে এসেছি আমাদের ১৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষের খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের অবদানের কথা বলতে।’
তিনি বছরের পর বছর ধরে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমগ্র জাতিসংঘ খাদ্য ব্যবস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আশা করি ‘বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কক্ষ’ এর সকল দর্শনার্থীদের স্বাগত জানাবে এবং তাদের পর্যাপ্ত স্বাচ্ছন্দ্য ও অনুপ্রেরণা প্রদান করবে।’
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২