অনলাইন ডেস্ক :
পেশাদার ফুটবল লিগের খেলা মাঝপথে স্থগিত হয়নি এমন দিন খুঁজে পাওয়া কঠিন। বারবার ফিকশ্চার পরিবর্তন করতে হয়েছে। নানা জটিলতায় খেলা বারবার পিছিয়েছে। ফিকশ্চার ঘোষণা দিয়েও সময় মতো খেলা মাঠে গড়ায়নি। আর এসব নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। সেই সব ঝুটঝামেলা থেকে এবার দেশের প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ ফিকশ্চার থেকে একচুলও নড়েনি। যেভাবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, ঠিক সেভাবেই খেলা শেষ হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে একটি দিনের জন্যও লিগের খেলা বদল হয়নি। এটা অনন্য এক ইতিহাস হয়েছে। এবারই প্রথম বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে লিগের কোনো খেলা হয়নি। ভেন্যু সংকট ছিল। তারপরও লিগের খেলা বন্ধ রাখা হয়নি। লিগের সব খেলায় ঢাকার বাইরে রাজশাহী, গোপালগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, ঢাকার বসুন্ধরা কিংসের মাঠে খেলা খেলা হয়েছে।
গত ৯ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ২২ জুলাই শেষ হয়েছে পেশাদার ফুটবলের এবারের মৌসুম। লিগের প্রচার প্রচারণা নিয়ে বাফুফের আফসোস আছে। বাফুফের সভাপতি একই সঙ্গে লিগ কমিটির চেয়ারম্যানও। তিনি খুব বড় করে না বললেও তার কণ্ঠে আফসোস ছিল, আক্ষেপ ছিল। লিগের ম্যাচগুলো সেভাবে প্রচারের আলোয় আসেনি। তারপরও তিনি খুশি ঘোষিত ফিকশ্চার অনুসারে খেলা হয়েছে বলে। বাফুফে সভাপতি আগেই জানিয়েছিলেন যতকিছু হোক ফিকশ্চার বদল হবে না। অনেকের কাছে বিষয়টি কানে তোলার মতো ছিল না। কারণ অতীত ফিকশ্চার বলছে অনিয়মিতভাবেই খেলা হয়েছে। ফিকশ্চার ঠিক রাখতে না পারার উদাহরণ আছে। সেই গন্ডি থেকে বাফুফে বেরিয়ে আসতে পারবে না।
কিন্তু ক্লাবগুলো এবং বাফুফের এক নীতির কারণে লিগের প্রত্যেকটা খেলা ঠিক সময়ে হয়েছে। ক্লাবগুলো ঢাকার বাইরে খেলতে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ খচর করেছে। আর্থিকভাবে কষ্ট করেছে প্রায় সব ক্লাব। তারপরও ক্লাবগুলোর যে অবদান তা স্বীকার করে বাফুফে। গোলের তালিকা বিদেশিরাই দখলে রাখছেন এবারের লিগেও সেই বিদেশিরাই গোলদাতার তালিকা উঁচিয়ে ধরেছেন। বাংলাদেশের ফুটবলারদের নামগন্ধ নেই শীর্ষ গোলদাতার তালিকার শীর্ষ স্থানে। লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ডরিয়েলটনের দখলে ১ নম্বর স্থান। ২০ গোল করেছেন তিনি। মোহামেডানের অধিনায়ক মালির ফুটবলার সুলায়মান দিয়াবাতে ১৬ গোল করেছেন, সঙ্গে আছে তিন হ্যাটট্রিক। ১২ গোল নিয়ে তৃতীয় স্থানে আবাহনীর কোস্টারিকান তারকা দানিয়েল কলিন্দ্রেস।
শীর্ষ ১০ গোলদাতার মধ্যে বাংলাদেশের কোনো ফুটবলার নেই। তবে বাংলাদেশের একজন ১০ নম্বরে আছেন সেটা অব অবশ্য বলা যায়। তিনি বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পাওয়া নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার আবাহনীর এলিটা কিংসলে। তিনি করেছেন ৮ গোল। আর ১৫ নম্বরে আছেন চট্টগ্রাম আবাহনী ইকবাল হোসেন। তিনি করেছেন ৫ গোল। এলিটা কিংসলেকে বিদেশি ধরলে কিংবা বাংলাদেশি হিসেবে না ধরলে লিগে শীর্ষস্থান পাওয়া বাংলাদেশের ফুটবলার ইকবাল হোসেন শীর্ষ গোলদাতা। লিগের সবচেয়ে বড় বাজেটের দল ছিল বসুন্ধরা কিংস। প্রিমিয়ার লিগের তিন চারটা ক্লাবের বাজেট এক করলেও বসুন্ধরা কিংসের বাজেট ওপরে থাকবে। সেই দলটার রক্ষণভাগ, মাঝমাঠ এবং আক্রমভাগে ফাটল ধরানোর মতো শক্তি কারো নেই সেটা কাগজে কলমে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
এবারের লিগের রেলিগেশন হওয়া উত্তরা আজমপুর এফসি ২০ ম্যাচের মধ্যে একটিও জিততে পারেনি। সেই দলটিই কিংসে কাছ থেকে ১ পয়েন্ট কেড়ে নিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারেনি কিংস। পুলিশই একমাত্র দল যারা কিংসের ঘরে আঘাত করেছে। পুলিশ হারিয়েছে বসুন্ধরা কিংসকে। তা না হলে কিংস অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব মাথায় নিতে পারত। সেই জায়গা কিংসের আক্ষেপ বা কষ্ট থাকতেই পারে। ১৫ পয়েন্ট ব্যবধানে লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাও কম না। লিগে সবচেয়ে বেশি ৫১ গোল করেও ১৩ গোল হজম করেছে কিংস। জাতীয় দলের সেরা ডিফেন্ডার, গোলকিপার নিয়েও তারা ১৩ গোল হজম করেছে। তৃতীয় স্থান নিয়ে চমক দিয়েছে পুলিশ। মোহামেডান চতুর্থ স্থান পেলেও সমর্থকরা আগের রেজাল্টের তুলনায় এবার অখুশি নন। সাদা কালোরা এবার ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ১৪ বছর পর।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা