অনলাইন ডেস্ক :
অবশেষে! টানাপড়েন, দ্বন্দ্ব, নাটক, অনিশ্চয়তার মেঘ সরিয়ে আজ বুধবার মাঠে গড়িয়েছে এশিয়া কাপ। ১৬তম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে মুলতানে মুখোমুখি হয় বাবর আজমের পাকিস্তান ও রোহিত পাউডেলের নেপাল। মুলতানের ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মতো এশিয়া কাপ শুরুর আগেই উত্তাপ ছড়িয়েছিল যথেষ্ট। রাজনৈতিক কারণে ভারত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ পাকিস্তানে না আসার কথা জানিয়ে দেয় স্পষ্টভাবে। প্রতিবাদে পাকিস্তানও দেয় ভারতে হতে যাওয়া বিশ্বকাপে না খেলার হুমকি। দুই পক্ষের অনড় অবস্থানে এশিয়া কাপ হয়ে পড়ে অনিশ্চিত।
কখনো স্বাগতিক হিসেবে নাম আসে আরব আমিরাতের তো কখনো চিত্রনাট্যে ঢুকে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ‘হাইব্রিড মডেল’-এ ভারত-পাকিস্তান রাজি হয় এশিয়া কাপ খেলতে। তাতে পাকিস্তানে খেলা হবে মাত্র চারটি, বাকি ম্যাচগুলো শ্রীলঙ্কায়। খেলা শুরুর আগেই যে উত্তেজনা, বল মাঠে গড়ালে না এর পারদ পৌঁছে কত উচ্চতায়? অবশ্য এশিয়া কাপে এমন ঝাঁজ নতুন নয়। পাশাপাশি সীমান্তের কারণে যেমন থাকে রাজনৈতিক টানাপড়েন, তেমনি দলগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, আবেগ আর এক ইঞ্চি জমি না ছাড়ার মানসিকতা এশিয়া কাপের রোমাঞ্চ নিয়ে গেছে অন্য মাত্রায়, যা ক্ষেত্রবিশেষে দেখা যায় না বিশ্বকাপেও।
ভারত-পাকিস্তানের বৈরিতা তো আছেই। আফগানিস্তানের মতো পুঁচকে দলের খেলোয়াড়ের সঙ্গেও লেগে যায় পাকিস্তানের কারো! এরই রেশে কদিন আগে শেষ হওয়া তিন ম্যাচের সিরিজে মোহাম্মদ নবির সঙ্গে কথা বলেননি বাবর আজম। ‘নাগিন’ নাচে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ হয় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার। আবার ২ রানের জন্য শিরোপা হারিয়ে কেঁদে বুক ভাসান সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা। আবেগের এমন আতিশয্য বিশ্বকাপেও চোখে পড়েছে কালেভদ্রে। উত্তেজনার সেই এশিয়া কাপে বুধবার অভিষেক হলো নেপালের।
শুধু সার্কের দল বলে উড়ে এসে জুড়ে বসেনি নেপাল। গত মে-এপ্রিলে ১০ দলের এসিসি প্রিমিয়ার কাপ জিতেই এশিয়া কাপের মঞ্চে তারা। সেখানে নেপাল হারিয়েছে আরব আমিরাত, হংকংয়ের মতো আগে এশিয়া কাপ খেলা দলকে। ওয়ানডে বিশ্বকাপ লিগ-২-এ ১২ ম্যাচের ১১টি জিতে জায়গা করে নিয়েছিল বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে। ২০১৮ সালে ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়া দলটি র্যাংকিংয়ে উঠে এসেছে ১৫ নম্বরে।
২০২৭ সালে ১৪ দলের বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতেও প্রস্তুত নেপাল। সেই অভিযানে এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তানের মতো দুই পরাশক্তির সঙ্গে খেলার সুযোগ দারুণ কাজে দেবে বলে মনে করেন অধিনায়ক রোহিত পাউডেল, ‘বাবর আজম, বিরাট কোহলিদের খেলা টিভিতে দেখে এসেছি এত দিন। তাদের সঙ্গে খেলতে পারাটা অনেক বড় ব্যাপার হতে চলেছে আমাদের জন্য। এই অভিজ্ঞতা কাজে আসবে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে যেকোনো ফরম্যাটে প্রথম ম্যাচটা আমরা স্মরণীয় করে রাখতে চাই।’ এবারের এশিয়া কাপটা হচ্ছে বিশ্বকাপের মাসখানেক আগে। ওয়ানডের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টের জন্য এশিয়া কাপ তাই আদর্শ মঞ্চ এশিয়ান দলগুলোর জন্য। পাকিস্তানের প্রস্তুতি অবশ্য শুরু হয়েছে আগেই। তারা তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে আফগানিস্তানের সঙ্গে। ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতায় নিশ্চিত করেছে র্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থানও।
এশিয়া কাপে মুকুটটা ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ তাদের। কারণ ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা ছেড়ে কথা বলবে না মোটেও। তবে খেলা শুরুর আগে বড় ধাক্কা খেয়েছে ভারত। চোটের জন্য প্রথম দুই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছেন লোকেশ রাহুল। গত মঙ্গলবার কোচ রাহুল দ্রাবিড় নিশ্চিত করলেন এটা, ‘রাহুল আপাতত জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে থাকবে। প্রথম দুটি ম্যাচ খেলতে পারবে না। সুপার ফোরের আগে দেখা হবে ও পুরো ফিট হয়ে উঠেছে কি না।’
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা