April 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, February 8th, 2023, 7:55 pm

এসডিজি বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: পি আই ডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার দেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বুধবার বেলজিয়ামের রানী ম্যাথিল্ড মেরি ক্রিস্টিন তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

জাতিসংঘের এসডিজি’র ২০২১-২০২৩ সালের পরিকল্পনায় সংযুক্ত ম্যাথিল্ডকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০২১ থেকে ২০৪১ সালের পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০৩০ এর বৈশ্বিক পরিকল্পনা ও এসডিজি’র লক্ষ্যগুলো দেশের বর্তমান ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে।

বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, নারীর ক্ষমতায়ন, মেয়েদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

যুদ্ধ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সারা বিশ্বে অস্থিতিশীলতা এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির সৃষ্টি করেছে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনগণকে। এটি অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।’

সফররত বেলজিয়ামের রানী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন খাতে অর্জিত বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বিশেষ করে শিক্ষায় নারী ও শিশুদের উন্নয়নের প্রশংসা করেন তিনি।

ম্যাথিল্ড বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি দেখে তিনি খুবই খুশি।

রাজনীতি, প্রতিরক্ষা ও বিচার বিভাগ নারী শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি নারীর কর্মসংস্থান এবং ক্ষতিগ্রস্ত নারী- বয়স্ক নারী, বিধবা এবং বিয়ে বিচ্ছেদ হওয়া নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনার বিষয়ে তার সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে রানীকে অবহিত করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, নারী ও শিশুরা মূলত সারাদেশে ১৮ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। ক্লিনিক থেকে প্রায় ৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্য দেয়া হয়।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। সরকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হাজার হাজার গর্ভবতী মহিলার জন্য মাঠ হাসপাতাল স্থাপন করেছে যারা প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সময় কক্সবাজারে এসেছিলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে ভাষানচর দ্বীপে স্থানান্তর করে তাদের জন্য উন্নত পরিবেশ নিশ্চিত করেছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য দুর্যোগে হতাহতের সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও টেকসই ঘর নির্মাণ করেছে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য সারা দেশে ৮৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

বাংলাদেশকে অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় তার সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। যার মধ্যে রয়েছে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন, সবুজ এলাকা তৈরি, বাঁধ নির্মাণ এবং উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বাড়ি নির্মাণ।

বৈঠকে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমুদ্র বিষয়ক সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

বেলজিয়ামের রানী জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) প্রবক্তা হিসেবে তিন দিনের কার্যনির্বাহী সফরে সোমবার সকালে বাংলাদেশে এসেছেন।

রানী সোমবার ঢাকার ইউনিসেফ স্কুল নারায়ণগঞ্জে একটি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেন এবং মঙ্গলবার কক্সবাজারের কুতুপালং-এ বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন, যেখানে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

—-ইউএনবি