অনলাইন ডেস্ক :
স্টেডিয়াম জুড়ে দর্শকখরা, সূচী নিয়ে বিতর্ক, আউটফিল্ড নিয়ে সমালোচনা, মাঠের লড়াইয় ছাপিয়ে ভারতে চলমান ক্রিকেট বিশ্বকাপে এখন এগুলোই আলোচনার বিষয়। আর এর ফলে কার্যত ৫০ ওভারের ক্রিকেট টিকে থাকা নিয়ে আরো একবার সমালোচনার মুখে পড়লো ক্রিকেট বিশ্ব। খেলাটির ছোট ফর্মেট হিসেবে পরিচিত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা এমনিতেই ওয়ানডে ম্যাচের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর সেই শঙ্কাকে আরো সামনে নিয়ে এসেছে ভারতীয় বিশ্বকাপের বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়। ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপে শুরু হয়েছে মাত্র এক সপ্তাহ আগে। কিন্তু এর মধ্যেই বিভিন্ন স্টেডিয়ামে খালি আসন সকলের নজড় কেড়েছে। উপমহাদেশে ক্রিকেট ক্রেজ নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই। তার উপর আসরটি যদি হয় বিশ্বকাপ তবে তো কথাই নেই। অতীতেও তার প্রমান মিলেছে।
কিন্তু এবার তার ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে ভারতে। এমনকি স্বাগতিক ভারতের ম্যাচেও দর্শক খরা দেখা গেছে। চেন্নাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে স্বাগতিক দলের প্রথম ম্যাচে স্টেডিয়ামের অনেক আসনই শুন্য ছিল। অথচ এবারের বিশ্বকাপে অন্যতম বড় ম্যাচগুলোর মধ্যে এটি একটি। ১ লাখ ৩২ হাজার ধারনক্ষমতা সম্পন্ন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে পরিচিত আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচটিতে মাত্র ৪৭ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিল। অথচ এই একই ভেন্যুতে গত বছর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ(আইপিএল) টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ম্যাচে এক লাখ মানুষের সমাগম হয়েছিল।
২০১১ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রথমবারের মত আরো একটি আসর আয়োজন করছে ভারত। সেবার বাংলাদেশ, শ্রীলংকার সাথে যৌথ আয়োজক হলেও এবার এককভাবে আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে বিসিসিআই। যদিও অনেকের ধারনা আইসিসি বিলম্বে ম্যাচের সূচী ঘোষনা করায় তা টিকেট বিক্রিতে প্রভাব ফেলেছে। এবারের আসরে প্রথমবার সূচী ঘোষনা হয় বিশ্বকাপে শুরুর মাত্র ১০০ দিন আগে।
অথচ ২০১৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের সূচী এক বছরেরও বেশী সময় আগে ঘোষনা করা হয়েছিল। চলতি বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র দুই মাস আগে গত ৯ আগস্ট পরিবর্তিত সূচী ঘোষনা করে আইসিসি। ঐ সময় মোট ৯টি ম্যাচের সূচী পরিবর্তন করা হয়। যার মধ্যে ভারত বনাম পাকিস্তানের মধ্যকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচটি ছিল। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের এই ৯টি ম্যাচের মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি ম্যাচ রয়েছে। ভারত ছাড়া বাকি ম্যাচগুলোর টিকেট ২৫ আগস্ট থেকে বিক্রি শুরু হয়।
ভারতের ম্যাচগুলোরর জন্য ৩১ আগস্ট থেকে টিকেট ক্রয় করেছে সমর্থকরা। এ কারনেই সমর্থকদের জন্য বিভিন্ন ভেন্যুতে যাতায়াতের বিষয়টি জটিল হয়ে পড়ে। ভারতীয় নিউজ ওয়েবসাইট দ্য মর্নিং কনটেক্সটের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক প্রিন্স থমাস বলেছেন, ‘আমরা হয়তোবা বিশ্বের সচেয়ে ধনী ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন হতে পারি, কিন্তু বিশ্বকাপ আয়োজনে সবচেয়ে বাজে অবস্থা দেখা গেছে আমাদের বোর্ডের। একজন ক্রিকেট ভক্ত যখন টিকেট কিনতে গেছে সে হয়তো কাঙ্খিত টিকেটটি পায়নি, অথচ সব ম্যাচেই শুন্য আসন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’ এবারের বিশ্বকাপের ১০ ভেন্যুর অন্যতম ধর্মশালার
আউটফিল্ড নিয়ে ইতোমধ্যেই সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে। গত মাসে ভারী বৃষ্টির কারণে সেখানকার আউটফিল্ডের অবস্থা যাচ্ছেতাই হয়ে উঠেছে। শনিবার বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের মধ্যকার প্রথম ম্যাচটি আয়োজনের আগে সময়মত মাঠ প্রস্তুতে মাঠ কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। তারপরও কিছুকিছু জায়গায় সমস্যা রয়েই গেছে। আফগান কোচ জনাথন ট্রট স্বীকার করেছেন একটি বাউন্ডারি আটকাতে গিয়ে মুজিব উর রহমান হাঁটুর গুরুতর ইনজুরি থেকে কোনমতে রক্ষা পেয়েছে।
শনিবারের ম্যাচের পর আইসিসি মাঠ পর্যবেক্ষন করে জানিয়েছে এখানকার আউটফিল্ড মোটামুটি তবে খেলার উপযোগী। যদিও বাংলাদেশের বিপক্ষে মঙ্গলবারের ম্যাচের আগে পুরো মাঠ নিয়ে দারুন সমালোচনা করেছেন ইংলিশ অধিানয়ক জস বাটলার। ব্যাটার স্যাম কারান ম্যাচ শেষে বলেছেন কোন ধরনের ইনজুরি ছাড়া ম্যাচটি শেষ হওয়ায় তারা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা