নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক কাউন্সিলর আলেয়া সারোয়ার ডেইজি ও দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মাহমুদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ অন্যান্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অনুসন্ধানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামের নেতৃত্ব একটি টিম তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। দুপুর ২টা পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে আলেয়া সারোয়ার ডেইজি বলেন, আমি যে অবস্থানে ছিলাম, সেখান থেকে নিয়োগসংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় ছিল না। আমি রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড সূত্রে ওয়াসার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলাম। দায়িত্ব পালনকালে ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ করেছি। ওয়াসায় নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল কি না, তা আমার জানা নেই। এটা দুদক তদন্ত করে বলতে পারবে। ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংরক্ষিত আসন থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালের মার্চে ঢাকার দুই সিটিতে মশা মারতে ‘কামান ব্যবহার’ করে আলোচিত হন ডেইজী। ওই সময় তার মশা নিধনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। অনেকে তার এমন কাজের সমালোচনা করেন। ২০২০ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন আলেয়া সারোয়ার ডেইজি। সেই নির্বাচনে তিনি জিততে পারেননি। তবে নির্বাচনী প্রচারণায় ডেইজির কয়েকটি ভিডিও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়। তার একটি গানের মাঝে ডেইজিকে ভোট চাইতে দেখা যায়। অন্যটিতে রাস্তার মাঝখানে একজন মধ্যবয়সী পুরুষ ‘ডেইজি আপার সালাম নিন, লাটিম মার্কায় ভোটি দিন’ গানের তালে তালে নাচতে দেখা যায়। ‘ডেইজি আপা’ নামটি এরপর থেকেই মূলত সবার মুখে ছড়িয়ে পড়ে। ওয়াসার অনিয়মের অভিযোগে এর আগে সংস্থাটির বিভিন্ন পর্যায়ের ডজনখানেক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তিনটি ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ছয় প্রতিষ্ঠানের নথিপত্র তলব করে এর আগে চিঠি দিয়েছিল সংস্থাটি। ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৩২ কোটি চার লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ছয়টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে- এমন অভিযোগে তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। পরে দুদকের এখতিয়ার বলে আদালত রায় দেন। ওই আবেদনের সূত্র ধরেই দুদকে আরও একটি অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। অন্যদিকে ওয়াসার পদ্মা-জশলদিয়া প্রকল্পে প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা, গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে এক হাজার কোটি টাকা, দাশেরকান্দি পয়শোধনাগার প্রকল্পে এক হাজার কোটি টাকা, গুলশান-বারিধারা লেক দূষণ প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতিসহ আরও কয়েকটি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু