জেলার উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রথমে ঘটনাস্থলে ৪ জন ও পরে হাসপাতালে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১২ জন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৮ এ অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ নামে একটি মাদ্রাসায় দুস্কৃতিকারিরা হামলা চালালে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার ও সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।
শুক্রবার ভোর রাত ৪টার দিকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৮ এর এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় হামলার এই ঘটনা ঘটে। এর আগে পুলিশ উক্ত ক্যাম্পে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের কথা জানালেও পরে ক্যাম্পে দায়িত্বরত এপিবিএন পুলিশ মাদ্রাসায় দুষ্কৃতিকারীদের হামলার কথা নিশ্চিত করেন।
এই ঘটনায় নিহতরা হলেন- রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১২, ব্লক-জে-৫ এর বাসিন্দা হাফেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক মোঃ ইদ্রীস (৩২), ক্যাম্প-৯ ব্লক-১৯ এর মৃত মুফতি হাবিবুল্লাহর ছেলে ইব্রাহীম হোসেন (২৪), ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এইচ -৫২ এর নুরুল ইসলামের ছেলে মাদ্রাসার ছাত্র আজিজুল হক (২২), একই ক্যাম্পের ভলান্টিয়ার আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ আমীন (৩২)। এছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এফ-২২ এর মোহাম্মদ নবীর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫), এফডিএমএন ক্যাম্প-২৪এর রহিম উল্লাহর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক হামিদুল্লাহ (৫৫) ও ক্যাম্প-১৮, ব্লক- এইস ৫২ এর নুর মোহাম্মদের ছেলে ও মাদ্রার ছাত্র নুর কায়সার (১৫)।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-৮ এপিবিএন এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার শিহাব কায়সার জানান, শুক্রবার রাত আনুমানিক ৪টার দিকে ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালায়। হামলায় মাদ্রাসায় অবস্থানরত ৪ জন রোহিঙ্গা মারা যায়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়।
এসপি জানান- ঘটনা জানতে পেরে ময়নার ঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২ এর পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধারপূর্বক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে। এসময় পুলিশ হামলাকারীদের একজনকে একটি দেশীয় ওয়ান শুটার গান, ৬ রাউন্ড গুলি ও একটি ছুরি সহ হাতে নাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এঘটনায় ময়নার ঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২ এর পুলিশ সদস্যরা মাদ্রাসা ও আশপাশের এলাকায় ব্লক রেইড পরিচালনা করছে। ক্যাম্পের অন্যান্য ক্যাম্প এলাকায়ও একই সাথে ব্লক রেইড পরিচালনা করা হচ্ছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাদ্রাসায় হামলার ঘটনায় এই পর্যন্ত ৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদেহগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরীর পর ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ।
–বাসস
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক