জেলা প্রতিনিধি:
কক্সবাজারে ঘুরতে আসা এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে মামলায় গ্রেপ্তার হলেন চারজন। তাদের মধ্যে একজনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। তবে ধর্ষণকান্ডের মূলহোতা আশিকুল ইসলাম আশিক, ইসরাফিল হুদা জয় এবং মেহেদি হাসান বাবু এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। গত শনিবার রাতে আবুল কাশেমের ছেলে রেজাউল করিম (২৫), মৃত মুক্তার আহমদের ছেলে মামুনুর রশীদ (২৮), মৃত সালেহ আহমেদের ছেলে মেহেদী হাসানকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়। তারা এজহারভুক্ত আসামি না হলেও ধর্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে এজহারনামীয় রিয়জান উদ্দিন ছোটনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গত শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে এ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এই মামলার আগে আটক দেখানো হয় জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে। তাকে চারদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। যাদের নতুন করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হলেন- রেজাউল করিম, মামুনুর রশিদ ও মেহিদী হাসান। রোববার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া ট্যুরিস্ট পুলিশের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে এ তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানানো হয়। যদিও রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে এজহারনামীয় আসামিসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান। ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মুসলিম সাংবাদিকদের জানান, ওই নারীর আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে গ্রেপ্তারদের নাম উল্লেখ করেন। এরপর তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই সাথে মূল আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি। এসময় কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। গত বুধবার স্বামী-সন্তানকে জিম্মি ও হত্যার ভয় দেখিয়ে এক নারী পর্যটককে দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ পেয়ে রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজারের কলাতলীর ‘জিয়া গেস্ট ইন’ নামে একটি হোটেল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে র্যাব-১৫। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে হোটেলের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত তিনজনের মধ্যে দুইজনকে শনাক্তও করা হয়েছে। ওই নারীর বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, গত বুধবার সকালে ঢাকা থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে আসেন ওই নারী। এরপর কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে উঠেন। সেখান থেকে বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে ঘুরতে যান। লাবণী পয়েন্টে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে ওই নারীর স্বামীর ধাক্কা লাগে। পরে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জেরে সন্ধ্যায় স্টেডিয়াম সংলগ্ন পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে কয়েকজন যুবক তার স্বামী ও ৮ মাসের সন্তানকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। অপর একটি অটোরিকশায় তিন যুবক গৃহবধূকে তুলে নেয়। পরে তারা পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুঁপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরে হোটেলের ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে আগেই শনাক্ত করার কথা জানায় র্যাব। বাহিনীটির ভাষ্য, ওই দুই যুবক হলেন কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম ও ইসরাফিল হুদা জয়া। পুলিশ জানায়, প্রধান আসামি আশিকের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ইয়াবা অস্ত্রসহ ১৭টি মামলা রয়েছে। চার মাস আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। এছাড়াও ই¯্রাফিল খোদা জয়ের বিরুদ্ধে আছে দুটি মামলা।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি