স্বাস্থ্যসেবার সুবিধা সম্প্রসারণে বাংলাদেশ সরকার এবং বিশ্বব্যাংকের যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) কক্সবাজারে নির্মাণাধীন ১০০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ১২টির কাজ সম্পন্ন করেছে।
রবিবার কক্সবাজারে নবনির্মিত ১২টি ক্লিনিক উদ্বোধনকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর থেকে বাংলাদেশ সরকার জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমকে ব্যাপক বাড়িয়েছে এবং আইওএম-এর সহযোগিতায় কক্সবাজারসহ সারা দেশে কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম চালু করেছে। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে একসঙ্গে কাজ করছি। কক্সবাজারে নবনির্মিত কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধন এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য অনেক সরকারি পদক্ষেপের মধ্যে একটি।
তিনি আরও বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মৌলিক অবকাঠামো এবং পরিষেবাগুলোতে সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। ইতোমধ্যেই জাতীয় পরিষেবাগুলোর গড় তুলনায় অনেক কম ছিল। বিদ্যমান স্বাস্থ্য সুবিধাগুলোর মধ্যে অনেকগুলো দুই দশক আগে নির্মিত হয়েছিল এবং বন্যা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপদের কারণে অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
আইওএম পুরনো ক্লিনিকগুলো ভেঙে ফেলে এবং বৃহত্তর, পরিবেশগতভাবে টেকসই বিল্ডিং তৈরি করে যার মধ্যে রয়েছে সৌর-চালিত সিস্টেম, নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং উন্নত স্যানিটেশন সুবিধা।
বাংলাদেশে আইওএম চিফ অব মিশন আবদুসাত্তর এসয়েভ বলেছেন, ‘শরণার্থী এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের বহুমাত্রিক চাহিদা একই সাথে তাৎক্ষণিক এবং দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে মানবিক উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা পালনকারীর মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংক এবং আইওএম-এর মধ্যে এই সহযোগিতা কিভাবে মানবিক-উন্নয়ন সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী ফলাফলে রূপান্তর করা যায় তার একটি দৃঢ় উদাহরণ উপস্থাপন করে।’
প্রথমত এই সম্প্রদায়গুলোর যত্ন নেয়া, এই ক্লিনিকগুলো প্রজনন এবং পারিবারিক ওষুধের সঙ্গে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে; স্বাস্থ্য স্ক্রীনিং, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার প্রতিক্রিয়া এবং পুষ্টি পরামর্শ।
বাংলাদেশ ও ভুটানের বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান্ডান চেন বলেন, ‘আমরা মানবিক সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী এবং বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
‘অন্যান্য নেতৃত্বের মধ্যে আইওএমকে মোট ১৫ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান সহায়তার মাধ্যমে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের স্থানীয় সম্প্রদায়ের চাহিদা পূরণে এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণ স্বদেশে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত সহায়তা করবে।’
আইওএম জেলার একমাত্র মাধ্যমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র সদর হাসপাতালের চেয়েও আপগ্রেড কর্মী ও সজ্জিত করেছে। ২৫০-শয্যার সুবিধা সম্পন্ন বিশেষ হাসপাতালটিতে নবজাতকের যত্ন, জরুরি, নিবিড় পরিচর্যা এবং করোনারি কেয়ার ইউনিট সহ বিশেষায়িত পরিষেবা প্রদান করে; কোভিড-১৯ চিকিৎসা; রক্ত সঞ্চালন এবং এইচআইভি এবং অন্যান্যের মধ্যে এইডস রোগের জন্য স্বেচ্ছাসেবী পরামর্শ এবং পরীক্ষার সুবিধা আছে।
সদর হাসপাতালের ৬০ বছর বয়সী স্থানীয় রোগী আবুল হাসান বলেন, ‘আমাদের যে ওয়ার্ড থেকে স্থানান্তর করা হয়েছে তার চেয়ে সম্প্রতি নির্মিত রোগীর ওয়ার্ডটি ভালো। ‘হাসপাতালটি সম্পূর্ণ সংস্কার হয়ে গেলে আমরা অনেক উপায়ে উপকৃত হব।’
অবশিষ্ট ক্লিনিকগুলোর নির্মাণ এবং জেলা হাসপাতালের সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে একং ২০২৩ সালে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রাক-নির্মাণ পর্যায়ে আইওএম স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলোতে অব্যাহত সুবিধা নিশ্চিত করতে অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করেছিল।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি