অনলাইন ডেস্ক :
দলের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ওয়ানডে বিশ্বকাপে চোট পেয়ে রয়েছেন বাইরে, তার পরিবর্তে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ থেকেই বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভার উঠেছে তরুণ ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তর কাঁধে। আর এই গুরু দায়িত্ব পাওয়ার পর দুই সিরিজে দুইটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত উপহার দিয়ে ফেলেছে দেশের ক্রিকেটকে। টেস্ট ফরম্যাটে প্রথম বারের মতো অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়ার পরই ঘরের মাটিতে প্রথম বারের মতো সাদা পোশাকে কিউইদের হারিয়ে দেয় শান্ত বাহিনী। এরপর নিউজিল্যান্ডে তিন ম্যাচ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে গিয়ে এবার নতুন এক অধ্যায় লেখলেন শান্তরা।
২০০৭ সালে প্রথম বারের মতো ওয়ানডে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরে যায় বাংলাদেশ। সেই থেকে শুরু এই সিরিজের আগ পর্যন্ত সেই দেশে নির্ধারিত ওভারের এই ফরম্যাটে ১৬ ম্যাচে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হয়ে সব কটি ম্যাচেই হেরেছিলেন টাইগাররা। তবে এবার সেই নিউজিল্যান্ডে পা রেখেই রেকর্ড বদলানোর কথা জানান তরুণ টাইগার অধিনায়ক শান্ত। জানান এবার স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয় নিয়েই তারা ফিরবেন। আর করেছেনও তা-ই। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ হারার পর তৃতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা
। শুধু জয় বললে ভুল হবে রীতিমতো ব্ল্যাকক্যাপসদের ওপর শাসন চালিয়েই জিতেছেন। প্রথমে বোলারদের দাপটের পর ব্যাটাররাও দেখে শুনে লক্ষ্য তাড়া করে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন। ঐতিহাসিক জয় পাওয়ার পর শান্ত বলেন, ‘ভালো লাগছে জিততে পেরেছি, সব থেকে বেশি ভালো লাগছে যে আমার আমার যে পরিকল্পনা ছিল তা পুরোপুরি ভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। আমি খুবই ক্লিয়ার মাইন্ড ছিলাম। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো, দল জিতেছে।’ তবে এই জয়ের পরও কিছুটা হতাশা কাজ করছে শান্তর মধ্যে।
কারণ তিনি শুরু জয় নয় কিউিইদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়েই এই দেশে পা রেখেছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই গর্ব করার মতো একটা ফলাফল এনেছি। একটি ম্যাচ জিততে পেরেছি। তবে আমার কাছে জানতে চাওয়া হলে আমি সিরিজ জিততে এসেছিলাম। এটা আমি উদ্দেশ্য করেই বলেছিলাম। প্রথম ম্যাচটা দুর্ভাগ্যবশত বৃষ্টির কারণে বোলিং অপশন শেষ হয়ে গিয়েছিল। তো অবশ্যই খুশি যে জিততে পেরেছি তবে সিরিজ জিততে পারলে আরেকটু ভালো লাগত।’ তবে শান্তর এমন কথা দিয়ে কথা রাখার বিষয়টি এবারই যে প্রথম তা কিন্তু নয়।
এর আগে বিশ্বকাপে ভরাডুবি করে দেশে ফেরার পর ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে বলেছিলেন, সিলেটে ম্যাচ জিততে চান। সত্যিই নিজের অধিনায়কত্বের প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছিলেন শান্ত। এবারও তেমন কিছুই করলেন। নিজেদের ওপর বিশ্বাস, জয়ের তীব্র আকাক্সক্ষা, নিজেদের সামর্থ্যরে ওপর প্রবল আত্মবিশ্বাস, প্রক্রিয়া মেনে পরিকল্পনা সাজানো আর হার না মানসিকতার কারণে প্রতিপক্ষের সামনে দুমড়েমুচড়ে পড়ছে না বাংলাদেশ, তা মাঠের ক্রিকেটে দেখা যাচ্ছে।
সব কিছু নিজেই পরিষ্কার করে বললেন, ‘আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, খেলা শুরুর আগে আমাদের কাজটা কী, আমাদের প্রস্তুতি, কাজের প্রতি আমরা কতটা সৎ, আমরা কী করতে চাই, এসব গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে বড় কথা যে, আমরা কতটুকু বিশ্বাস করছি। দল হিসেবে আমার খুবই বিশ্বাস যে এই দল আরও ভালো করতে পারে। আমার কাছে সবসময়ই গ্রুপটাকে দেখে মনে হয়েছে যে, এই গ্রুপের ওই ক্ষুধাটা আছে যে এখানে এসে ম্যাচ জিততে পারি, সিরিজ জিততে পারি।’
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা