বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস মঙ্গলবার বাংলাদেশের করোনা ব্যবস্থাপনা ও টিকাদান কর্মসূচির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, এটি একটি ‘উল্লেখযোগ্য দক্ষতা’ এবং ‘সত্যিই আশ্চর্যজনক’।
তিনি বলেন, মহামারির ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ‘গ্লোবাল কোভিড অ্যাকশন প্ল্যান’-এ বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে চায়।
হাস বলেনে, ‘জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আওতার বাইরে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের মন্ত্রী পর্যায়ে এবং অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে একটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ স্পষ্টতই যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে। এটা সত্যিই বিস্ময়কর এবং অসাধারণ দক্ষতা’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি হাসান জাহিদ তুষার বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের রূপান্তরের প্রশংসা করে হাস বলেন, এটা সত্যিই উৎসাহজনক।
এ প্রসঙ্গে হাস আরও উল্লেখ করেন যে, হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে এটি আরও উন্নত হতে থাকবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় সাফল্যের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দল এবং সহযোগী সংগঠনগুলো শুরু থেকেই চব্বিশ ঘণ্টা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। সে সময়ে তারা সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে,
রোগীদের সেবা করেছে এবং ওষুধ ও অক্সিজেন বিতরণ করেছে।
তিনি বলেন, যখন ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে, তার সরকার জনগণকে বিনামূল্যে প্রথম, দ্বিতীয় এবং বুস্টার ডোজ দিয়েছে। এখন সরকার শিশুদের টিকা দিচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ টিকাদান প্রকল্প পরিচালনার জন্য অন্যান্য মন্ত্রণালয় এবং স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে সমন্বয় করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন তিনি, যা সত্যিই ভাল কাজ করেছে।
সে সময় তিনি নিজেই সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে জানান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বাংলাদেশে ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এবং তাকে প্রধানমন্ত্রীর এই কৃতজ্ঞতা পৌঁছানোর অনুরোধ জানান।
কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা পূর্ণ সামর্থ্য নিয়ে জনগণের জন্য কাজ করার চেষ্টা করছেন।
এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের বিষয়ে তিনি বলেন, তার সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ‘কোভিড-১৯ এর বিপর্যয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাংলাদেশ উন্নতি অব্যাহত রাখবে।’
এ লক্ষ্যে, প্রধানমন্ত্রী তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে সমাজের প্রান্তিক মানুষের জন্য তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোও তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে কাজ করছে।
এ সময় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি