November 18, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, November 12th, 2021, 8:34 pm

করোনা মোকাবিলায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ৫ দফা সুপারিশ

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে আয়োজিত এক বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন পাঁচ দফা সুপারিশ পেশ করেছেন। শুক্রবার (১২ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়। কোভিড-১৯ সংকট উত্তরণে এ পাঁচ সুপারিশের মধ্যে রয়েছে-
১. অনাকাক্সিক্ষত টিকা বৈষম্য রোধে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য অর্থায়ন ও সক্ষমতা বাড়াতে একটি টাইম বাউন্ড কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
২. লিঙ্গ ও ভৌগলিক ভারসাম্য বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যতে মহামারি প্রতিরোধে ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করতে হবে। এ লক্ষ্যে বিশ্ব নেতাদের নিয়ে সমন্বিতভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দ্বারা একটি উচ্চ স্তরের প্যানেল তৈরি করা।
৩. জাতীয় স্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোকে শক্তিশালী করতে একটি বিশেষজ্ঞ ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করতে হবে। এর নেতৃত্বে থাকবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
৪. বাংলাদেশের মতো নির্দিষ্ট কিছু দেশকে ভ্যাকসিন উৎপাদনে মেধা সম্পত্তি অধিকার ও প্রযুক্তি স্থানান্তরে সহায়তা দেওয়া।
৫. মহামারি প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন করতে হবে, যেন আগামী দিনে একটি সবুজ বিশ্ব গড়া সম্ভব হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঞ্চালনায় কোভিড-১৯ বিষয়ে ভার্চ্যুয়ালি এ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন অংশ নেন। এ ছাড়া বৈঠকে বিশ্বের ২৫ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অংশ নেন।
এদিকে চীনা সংবাদমাধ্যম সিজিটিএন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, পরিস্থিতির অগ্রগতির জন্য বিশ্বনেতাদের হাতে এখনো সময় রয়েছে। তবে এ নিয়ে আমরা খুব বেশি আশাবাদী নই। তিনি বলেন, ধনী দেশগুলোর পরিবেশ দূষণের ইতিহাস বহু পুরোনো। তাদের এ ধরনের কর্মকা-ের সঙ্গে তাল মেলাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অবশ্যই আরও অর্থসহায়তা দিতে হবে বলে দাবি করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। বহুল প্রত্যাশিত কপ২৬ সম্মেলনে এখন পর্যন্ত পাওয়া প্রতিশ্রুতির মাত্রা সন্তোষজনক নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে ইউরোপ সফরে রয়েছেন ড. মোমেন। সেখানে সম্ভাব্য একটি জলবায়ু চুক্তির জন্য বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। মোমেন বলেন, আমরা আশা করছিলাম, বিশ্বনেতৃত্ব হয়তো তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার প্রতিশ্রুতি দেবেন, লক্ষ্যমাত্রাটি কীভাবে অর্জন করা যায় তার একটি রোডম্যাপ থাকবে। দুঃখজনকভাবে, সেটি হয়নি। আরেকটা বড় সমস্যা হলো তহবিলের অভাব। তিনি বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুসারে উন্নয়নশীল দেশগুলো ধনীদের কাছে চলতি বছর থেকে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ চেয়েছিল। কিন্তু তাতে বিলম্ব হচ্ছে। তারা (ধনী দেশগুলো) বলছে, ২০২৩ সাল থেকে হয়তো এটি শুরু হতে পারে। সেটি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, দরিদ্র দেশগুলো যেন আরও বেশি নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের দিকে যেতে পারে, সেজন্য উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই ‘প্রযুক্তি স্থানান্তর’ এবং ‘রেয়াতি অর্থায়ন’-এ এগিয়ে আসতে হবে। এমনিতেই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড়, খরা ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর বড় হুমকিতে রয়েছে বাংলাদেশে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে প্রতি সাতজনের একজন বাস্তুচ্যুত হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকিতে থাকা ৫৫টি দেশের জোট ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) বর্তমান সভাপতি বাংলাদেশ। এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় ধনী দেশগুলোকে আরও বেশি অর্থায়নের জন্য ক্রমাগত দাবি জানিয়ে আসছে সিভিএফ। ড. মোমেন বলেন, জলবায়ু অভিবাসীদের পাশাপাশি যেসব মানুষ নিজেদের ঘরছাড়া হয়েছে, কাজ হারিয়েছে, তাদের অবশ্যই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একা এই সংকটের মুখে পড়া উচিত নয়। ধনীদের অবশ্যই সেই বোঝা ভাগাভাগি করতে হবে, যা এখনো হয়নি।