নিজস্ব প্রতিবেদক:
কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে বিপুলসংখ্যক প্রকল্পের অর্থছাড় স্থগিত করা হচ্ছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আগামী ১ জুলাই থেকে তা কার্যকর হবে। চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে ওসব প্রকল্পের বাস্তবায়নের সময়। যে কোনো প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে মেয়াদ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়ার বিধান থাকলেও ওসব প্রকল্পের ক্ষেত্রে তা নেয়া হয়নি। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্তদের চরম অবহেলার কারণে ৫৫২টি প্রকল্পে অর্থছাড় ও ব্যয় স্থগিত করা হচ্ছে। প্রথম দিকে সিদ্ধান্ত ছিল ৩০ জুনের মধ্যে মেয়াদ শেষ হবে তেমন প্রকল্প আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা যাবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিশেষ বিবেচনায় ওসব প্রকল্প যুক্ত করা হলেও মেয়াদ বাড়ানো ছাড়া অর্থছাড় বা ব্যয় করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ওসব প্রকল্পের মধ্যে সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে থাকা ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প এবং বাস র্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পও রয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি যথাসময়ে না হওয়ায় অর্থবছরের প্রথম ৪/৫ মাস ওসব প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ করা অর্থ খরচ করা সম্ভব হয় না। ফলে এডিপির বরাদ্দ ব্যবহার কম থাকে এবং সামগ্রিকভাবে এডিপি বাস্তবায়নে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। প্রকল্পগুলোর মেয়াদ বৃদ্ধি বা সংশোধনের সব প্রক্রিয়া ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করা প্রয়োজন, যাতে জুলাই থেকে কাজ করা যায়। বর্তমানে বিপুলসংখ্যক প্রকল্প বিশেষ চিহ্ন (তারকা) দিয়ে নতুন এডিপিতে যুক্ত করা হলেও যতোদিন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি না হবে, ততোদিন অর্থ ছাড় বা ব্যয় করা যাবে না। আগামী ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হবে ওরকম ৫৫২ প্রকল্পের মধ্যে একটি প্রকল্প ১৫ বছর ধরে চলমান আছে। তাছাড়া এক যুগ বা ১২ বছর ধরে চলছে ৫টি, ১১ বছরের ২টি, ১০ বছরের ৫টি এবং ৯ বছরের প্রকল্প রয়েছে ৬টি। তাছাড়া ৮ বছরের ১১টি, ৭ বছরের ২৭টি এবং ৬ বছরের ৩৬টি প্রকল্প রয়েছে। অথচ ওসব প্রকল্প ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল।
এদিকে বিপুলসংখ্যক প্রকল্পের এমন দশা প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা সরকারকে এক ধরনের জিম্মি করছে। প্রকল্প পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলদের অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। তা করা না হলে একই ঘটনা সব সময়ই ঘটতে থাকবে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জানান, বছরের পর বছর এ ধরনের দায়িত্বহীন কর্মকান্ড আর চলতে দেয়া যায় না। আইএমইডিকে দিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে। প্রকল্পকল্পসংশ্লিষ্টরা যদি সচেতন না হয় তাহলে উন্নয়নের গতি কীভাবে আগাবে। সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ