May 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, July 17th, 2022, 8:59 pm

কানাডার প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্টে বিরোধী দলীয় উপনেতা মৌলভীবাজারের ডলি

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
দ্বিতীয় বারের মতো এমপি নির্বচিত হওয়ার পর এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে মৌলভীবাজারের মেয়ে ডলির আরেকটি সাফল্য। তিনি কানাডার বৃহত্তম প্রভিন্স অন্টারিওর প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্টে বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। কানাডার রাজনৈতিক দল এনডিপি তাকে দলের উপনেতা এবং প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্টের বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে মনোনীত করেছে। ডলি বেগম প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত, যিনি কানাডায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পেলেন। এমন সুসংবাদে গেল কয়েকদিন থেকে তার পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে আনন্দে উচ্ছ্বসিত এ জেলার বাসিন্দারা। প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর ডলি কানাডার অন্টারিওর প্রাদেশিক সংসদে বিরোধী দলীয় ডেপুটি হুইপ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। আর এবার তিনি বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে মনোনীত হন। ডলি বেগম কনজারভেটিভ প্রিমিয়ার ডাগ ফোর্ডের গণবিরোধী নানা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে খোলামেলো বক্তব্য রেখে অন্টারিওর প্রভিন্সিয়াল রাজনীতিতে আলোচনায় আসেন। ২০১৮ সালের ৮ জুন কানাডার অন্টারিও প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে স্কারবরো সাউথ ওয়েস্ট আসন থেকে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন ডলি বেগম। চলতি বছরের ২ জুন ডলি বেগম স্কারবরো সাউথ ওয়েস্ট আসন থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
ওই নির্বাচনের পর এনডিপি দলের নেতা এন্ড্রিয়া হারওয়াথ পদত্যাগের ঘোষণা দেন। ১৩ জুলাই এনডিপি দলের এবং অন্টারিওর সংসদে বিরোধীদলের উপনেতা হিসেবে ডলি বেগমকে নিয়োগের ঘোষণা দেয়া হয়। ২ জুনের নির্বাচনে ডলি প্রগ্রেসিভ কনজারভেটিভ পার্টির (পি.সি) ব্রেট স্নাইডারকে প্রায় ৬ হাজার ৫শ’ ১৮ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। ওই আসনে ৩৩৮৭৮ ভোটের মধ্যে ডলি পান ১৫৯৫৪ ভোট (৪৭.১ শতাংশ)। ৩য় হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত লিছা প্যাটেল এলআইবি দলের হয়ে পান ৬৩৫৬ ভোট। ওই নির্বাচনের পর দলের নেতা এন্ড্রিয়া হারওয়াথ পদত্যাগের ঘোষণা দিলে ডলি বেগমকে ঘিরে আলোচনা শুরু হয়। কানাডা প্রবাসী জেলার বড়লেখা উপজেলার আজিমগঞ্জ সালদিঘা বড়বাড়ির বাসিন্দা কামরুল ইসলাম, মো: আশরাফ তানিম ও মো: আরিফ তায়েফ বলেন, ডলির বিনয়ী স্বভাব, রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দল ও কমিউনিটির প্রতি তার উদার আন্তরিকতা তাকে যেমন নির্বাচনে বিজয়ী করেছে। তেমনি সংসদে বিরোধী দলীয় ডেপুটি হুইপ এরপর বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে নিয়োগ পেতে সহায়তা করেছে। যা সেদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে আমাদের জন্য অনেক বড় অর্জন। মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়নের বাজরাকোনা গ্রামের সন্তান ডলি বেগম। ডলি বেগম রাজা মিয়া ও জবা বেগম দম্পতির বড় সন্তান। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে ডলি বেগম বড়। তার ছোট ভাই মহসিন আহমদ সেদেশের একজন ব্যবসায়ী। ১৯৯৮ সালে ডলি তার বাবা-মার সঙ্গে কানাডায় পাড়ি জমান। ডলি মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনুমুখ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যায়ণরত অবস্থায় প্রবাসে চলে যান। সেখানে কানাডার গর্ডন এ ব্রাউন মিডল স্কুল ও ডব্লিউ এ পোর্টার কলেজিয়েট ইনস্টিটিউট থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। এরপর ইউনিভার্সিটি অব টরন্টো (সেন্ট জর্জ) থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে অনার্স সম্পন্ন করেন। এরপর লন্ডনের বিশ্বখ্যাত ইউসিএল বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডেভেলপমেন্ট এডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং বিষয়ে মাস্টার্স করেন। ছাত্রজীবনে অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন ডলি। তিনি স্কুল জীবন থেকে নানা বিষয়ে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি রাজনীতির প্রতি আগ্রহী ছিলেন। ডলি বেগমের ছোট চাচা মনুমুখ ইউনিয়নের বাজরাকোনার বাসিন্দা, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সদর উপজেলার ডাইরেক্টর মো: আব্দুস শহিদ বলেন, ডলির একের পর এক সফলতায় আমরা আনন্দিত। সে বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। তিনি ডলির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান।