অনলাইন ডেস্ক :
কানাডায় আবারো মিলেছে গণকবরের সন্ধান। একটি আবাসিক স্কুলে প্রায় একশ সম্ভাব্য কবরের খোঁজ মিলেছে বলে জানিয়েছে দেশটির একটি আদিবাসী সম্প্রদায়। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের পরিত্যক্ত সেন্ট জোসেফ মিশন আবাসিক স্কুলের প্রাঙ্গণে একটি ভূতাত্বিক জরিপে এই গণকবরের সন্ধান মেলে। কানাডা আদিবাসীদের বড় অংশ ফার্স্ট নেশন এর মধ্যে পড়ে। এই এলাকাটি কামলুপস থেকে প্রায় ৩শ কি. মি উত্তরে অবস্থিত। গত বছরের মে মাসে কামলুপস আদিবাসী আবাসিক স্কুলের প্রাঙ্গণ থেকে ২১৫টি শিশুর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছিল। তখন থেকে পরবর্তী কয়েক মাসে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর পরিচালিত বিভিন্ন আবাসিক স্কুল থেকে এক হাজারের বেশি শিশুর বেনামী গণকবর পাওয়া গেছে। এই আবাসিক স্কুলগুলোতে ১৬৫ বছরে প্রায় দেড়লাখ আদিবাসী শিশুকে জোর করে পরিবার থেকে আলাদা করে ভর্তি করা হতো। একসময় স্কুল পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন রোমান ক্যাথলিক চার্চ। নানা বিতর্কের মুখে ১৯৯৯ সালে স্কুল ভেঙে দিয়ে সেখানে অনাবাসিক স্কুল চালু করা হয়। তবে এখনো সেখানে রয়ে গেছে গির্জা, ধর্মযাজক আর সমাধিস্থল। কানাডার কেন্দ্রীয় সরকার যদিও এই প্রথার জন্য ২০০৮ সালে ক্ষমা চেয়েছে কিন্তু এসব আবাসিক স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব যে প্রতিষ্ঠানের হাতে ছিল তার প্রধান ক্যাথলিক চার্চ এখন পর্যন্ত এজন্য ক্ষমা বা দুঃখ প্রকাশ করেনি। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, ২০২১ এর আগে মে মাসে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের কামলুপসে আদিবাসী শিশুদের একটি আবাসিক স্কুলপ্রাঙ্গণে অপ্রাপ্তবয়স্ক ২১৫ জনের দেহাবশেষের সন্ধান মেলে। এরপরই কানাডায় আদিবাসীদের ওপর একসময়ের ঔপনিবেশিক বর্বরতার বিষয়টি আবারো নতুন করে সামনে আসে। ১৮৩১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত কানাডার আবাসিক শিক্ষাব্যবস্থার অধীনে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছিল দেড় লাখ আদিবাসী শিশুকে। তাদের খেতে দেয়া হতো না, করা হতো নানা শারীরিক ও যৌন নির্যাতন। বিষয়টিকে কানাডার ট্রুথ অ্যান্ড রিকন্সিলিয়েশন কমিশন ২০১৫ সালে ‘সাংস্কৃতিক জেনোসাইড’ আখ্যা দেয় বলে জানা যায়। পুলিশের ধারণা, পারিবারিক কলহের কারণেই এই হত্যাকা-। এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করা না হলেও তারা একে অপরের পরিচিত বলে ধারণা পুলিশের। এ ঘটনায় কাউকে জড়িত সন্দেহে আটক করা না হলেও নিরাপত্তা বাহিনী বলছে, এটি ‘পূর্বপরিকল্পিত’ হত্যাকা-। তবে ও এলাকার অপরাধী দলগুলোর সহিংসতার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। পারিবারিক কলহের জেরে হত্যাকা- হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা পুলিশের। কানাডায় গত কয়েক বছরে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে বন্দুক সহিসংতা। ২০১৩ সালের পর থেকে দেশটির বৃহত্তম শহরগুলোয় অপরাধী দলগুলোর ঘটানো হত্যাকা-ের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২০ সালে দেশটিতে এ ধরনের ২৭৭টি হত্যার ঘটনা ঘটেছিল।
আরও পড়ুন
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু