নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর:
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুরের কারমাইকেল কলেজের জিএল হোস্টেলে হামলা ও ভাঙচুর করেছে বহিরাগতরা। এ ঘটনায় শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন কলেজ শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় কারমাইকেল কলেজ জিএল হোস্টেলের প্রভোস্ট সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।রোববার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তাজহাট থানার ওসি নাজমুল কাদের।
রোববার সকালে সাংবাদিকদের এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমজাদ হোসেন। জানা গেছে, গতকাল শনিবার দুপুরে কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসের বাংলা মঞ্চের সামনে মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের আহসান নামে এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বহিরাগত মাদকাসক্ত এক টোকাইয়ের বাকবিতন্ডা হয়। এর জের ধরে বহিরাগত টোকাইদের একটি গ্রুপ সংঘবদ্ধ হয়ে ওই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করে। এ খবর পেয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এসে বহিরাগতদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।
এরই জের ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ৪০-৫০ জন বহিরাগত ছেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসের জিএল হোস্টেলে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় তারা কয়েকটি রুম ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় হল মনিটর আকিমুল ইসলাম ইমনসহ প্রায় ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে আকিমুল ইসলামকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই বহিরাগত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, ক্যাম্পাসে দ্রুত পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনসহ কয়েক দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় কলেজ অধ্যক্ষ তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে অধ্যক্ষকে জিএল হোস্টেলে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বিক্ষোভ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।আহত শিক্ষার্থীকে রংপুর মেডিকেলে দেখতে এসে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ হোসেন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় ছিল এবং আগামীতেও থাকবে। বহিরাগতরা এভাবে ক্যাম্পাসের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও যথাযথ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের যে কোনো কর্মসূচিতে পাশে থাকবে ছাত্রলীগ।অন্যদিকে কারমাইকেল কলেজ শিক্ষার্থী পরিষদের আহ্বায়ক রেজওয়ান আহমেদ সৌধ বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমরা সবসময়ই ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য অধ্যক্ষকে অনুরোধ করে আসছি। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বিকেল হলেই ক্যাম্পাসে টোকাই, বহিরাগতসহ বিভিন্ন জায়গার মানুষজনের আনাগোনা বাড়ে। প্রায়ই মোবাইল ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনার খবর পাই আমরা। এতে করে আমাদের ক্যাম্পাসে আমরা নিজেরাই অনিরাপদ হয়ে পড়ছি। এই অবস্থার অবসানে কলেজ প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণসহ হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন বলেন, ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী নয় আমার সন্তানদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিতে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে মামলা দায়ের করবো। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি তুলেছে, সেটিও আমরা দ্রুত বাস্তবায়ন করবো।
রংপুর মহানগর পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল কাদের বলেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারমাইকেল কলেজ এলাকায় পুলিশী নজরদারি রয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন
এইচএসসির ফল প্রকাশ শিগগিরই: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের জন্য সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখা হবে: বেরোবি উপাচার্য
তিন মাস পর ক্লাসে ফিরলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা