নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর :
বন্ধু অনেক দিন থেকে দেখি না তোমায় বলেই আলিঙ্গন। পরে চলে বসে ও দাঁড়িয়ে স্মৃতিচারণ। ১০৫ বছর উদযাপন উপলক্ষে কারমাইকেল কলেজ প্রাক্তন ছাত্র সমিতির উদ্যেগে শুক্রবারের (১২ নভেম্বর) মিলন মেলায় এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে কাছে পেয়ে এভাবেই স্মৃতিচারণ করেন। সকাল ৯টা থেকে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। পরে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত সচিব ও প্রাক্তন ছাত্র সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি । বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের (হাইকোর্ট বিভাগ) বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম, বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি , রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, কারমাইকেল কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আমজাদ হোসেন বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পদক রশিদুস সুলতান মানিক, কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এডভোকেট জিয়াউর রহমান, আবুল কাশেম প্রমূখ । অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীর সৃতি চারণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । পরে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি এমবুলেন্স উপহার হিসেবে প্রদান করা হয় ।
জানা যায়, ১৯১৬ সালের ১০ নভেম্বর তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার গভর্ণর লর্ড থমাস ডেভিড ব্যারন কারমাইকেল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তার নামানুসারেই কলেজের নামকরণ করা হয় কারমাইকেল কলেজ। ১৯১৭ সালের জুলাই মাসে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এই কলেজে আইএ ও বিএ ক্লাস খোলার অনুমতি দেয়। সেই সময় থেকে প্রায় দুই বছরের জন্য কলেজটির পঠনপাঠনের কাজ চলে রংপুরের বর্তমান জেলা পরিষদ ভবনে। এরপর ১৯১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি কারমাইকেল কলেজের মূল ভবনের উদ্বোধন করা হয়। গাছপালা, পাখপাখালিতে ভরা প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সৌন্দর্যে ঘেরা নয়নাভিরাম এর ক্যাম্পাস। কলেজে ঢুকতেই হাতের বাঁয়ে চোখে পড়বে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। পাশেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কিউএ মেমোরিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয় এছাড়া রয়েছে একটি সুদৃশ্য বিশাল মসজিদ, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, ছাত্রী বিশ্রামাগার, বিভিন্ন বিভাগীয় ভবন, ক্যান্টিন রয়েছে। ক্যাম্পাসের ভেতরে তাপসী রাবেয়া হল, বেগম রোকেয়া হল, জাহানারা ইমাম হল, জি এল ছাত্রাবাস, ওসমানী ছাত্রাবাস, সি এম ছাত্রাবাস, কে বি ছাত্রাবাস নামে আবাসিক হল রয়েছে। এছাড়া কলেজে সাব পোস্ট অফিস, অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম, একটি টালি ভবন (বিএনসিসি ও স্কাউট), ছাত্র বিশ্রামাগার, পুলিশ ফাঁড়ি, প্রশাসন ভবন ও দুটি বিশাল খেলার মাঠ রয়েছে। দক্ষিণে শহীদ মিনার, তিন তলা বিজ্ঞান ভবন (সেকেন্ড বিল্ডিং), তিন তলা কলা ও বাণিজ্য ভবন, দ্বিতল রসায়ন ভবন, নানা ফুলে সজ্জিত একটি বাগান। রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার বইয়ের এক বিশাল ভারসমৃদ্ধ লাইব্রেরী। উত্তর-পশ্চিম কোণে রয়েছে একটি উন্মুক্ত মঞ্চ, যা ‘বাংলা মঞ্চ’ নামে পরিচিত। কলেজের সব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের প্রাণকেন্দ্র এটি। উল্লেখ্য- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রীহ ২১টি বিষয়ে সম্মান ও স্নাতকোত্তরে প্রায় ৩২ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন।##
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি