April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, August 4th, 2022, 8:26 pm

কী রয়েছে চীনের অস্ত্র ভান্ডারে

অনলাইন ডেস্ক :

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে নতুন করে উতপ্ত হয়ে উঠেছে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক। মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে ঘিরে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্থিতাবস্থা’র সম্পর্ক ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে।তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র মধ্যে সংঘাতের আবহে সারা বিশ্বের কৌতুহলের বিষয় চীনের অস্ত্রের ভান্ডারে কী কী রয়েছে। একনজরে দেখে নেয়া যাক চীনের সামরিক শক্তি। ২০ লাখ ৩৫ হাজার সৈন্য নিয়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও শক্তিশালী পদাতিক সেনাবাহিনী রয়েছে চীনের। ৯ হাজারের বেশি ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়িও রয়েছে দেশটির হাতে। কিন্তু চীনের শক্তি হচ্ছে তার শক্তিশালী নৌবহর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ নৌবহর রয়েছে চীনের কাছে। চীনা নৌবহরে বর্তমানে ৩৫৫টি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে, অন্য কোনো দেশের কাছে এত যুদ্ধ জাহাজ নেই। এছাড়াও রয়েছে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ। এর মধ্যে চীনা প্রযুক্তিতে তৈরি ফুজিয়ার টাইপ ০০৩ এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার চীনা নৌবহরের প্রধান শক্তি। ওই যুদ্ধজাহাজে ৪০-৬০টি বিমান থাকতে পারে। থাকতে পারে হেলিকপ্টারও। এছাড়াও বর্তমানে চীনা নৌবহরে ছয়টি পারমাণবিক চালিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন, ছয়টি পারমাণবিক চালিত অ্যাটাক সাবমেরিন এবং ৪৬টি ডিজেল চালিত সাবমেরিন রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০৪০ সালের মধ্যে চীনা নৌবহরের আকার আরও ৪০ শতাংশ বাড়বে। চীনের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে জলসীমা। সে কারণেই নৌবহরের আয়তন বৃদ্ধিতে বিশেষ জোর দিয়েছে বেইজিং। চীনের কাছে বর্তমানে ৩৫০ টি পারমানবিক অস্ত্র রয়েছে। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের ধারণা, ২০৩০ সালের মধ্যে চীন পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা অন্তত চার গুণ বাড়িয়ে ফেলবে। যার অর্থ, ওই সময়ের মধ্যে বেইজিংয়ের হাতে থাকবে হাজার খানেক নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড বা পারমানবিক। চীনের হাতে কী কী ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র আছে তা নিয়ে স্পষ্ট তথ্য নেই বলেই সমরাস্ত্র বিশেষজ্ঞদের মত। কারণ শব্দের চেয়েও দ্রুতগামী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করেছে বেইজিং। তবে গত বছর দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় স্পষ্ট চীনের হাতে ঘণ্টায় ১২ হাজার ১৬৯ কিমি গতিবেগে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার প্রযুক্তি এসে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দু’ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র চীনের হাতে রয়েছে। একটি হাইপারসনিক গ্লাইড ক্ষেপণাস্ত্র, যা অনেক উঁচু দিয়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। অপরটি ফ্র্যাকশনাল অরবাইটাল বম্বার্ডমেন্ট সিস্টেম (এফওবিএস), যা নিচু কক্ষপথে উড়ে গিয়ে আঘাত সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, হাইপারসনিক অর্থাৎ শব্দের চেয়েও দ্রুতগামী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে জোর দিয়েছে চীন। লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক জিনো লিওনির মতে, বেইজিং অন্যান্য অস্ত্রের মতো ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতেও বড়সড় লাফ দিতে চাইছে। সম্প্রতি শোনা গেছে ‘রেলগান’ নামক একটি অস্ত্র তৈরিতে সক্ষম হয়েছে চীন। তড়িৎচৌম্বকীয় শক্তির মাধ্যমে সেই বন্দুক থেকে বুলেট ছোঁড়া হয়, যার আকার একটি গোলার মতো যা শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে আঘাত হানে। চীনের হাতে ‘রেলগান’ বসানো যুদ্ধজাহাজ রয়েছে বলেই জানা গেছে। আকাশ প্রতিরক্ষায় চীনের বিমান বহরে রয়েছে প্রায় ২ হাজার ১০০ অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান। রাডারকে ফাঁকি দিতে পারে এমন ড্রোন ও যুদ্ধবিমানও রয়েছে চীনের হাতে। যার নাম ‘স্টেলথ ড্রোন’ ও ‘স্টেলথ ফাইটার’। চীনের হাতে রয়েছে এজি-৬০০ নামের বিশ্বের সর্ববৃহৎ উভচর বিমান। যা আকাশ এবং জল দুই জায়গাতেই চলতে পারে। যা সাধারণত বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও রয়েছে ‘সিআর-৫০০ গোল্ডেন ঈগল’ নামে মানববিহীন হেলিকপ্টার। যুদ্ধ মানে শুধুমাত্র সংঘাত নয়। যুদ্ধের সঙ্গে মিশে রয়েছে সামরিক কৌশলও। চীনা সমরসজ্জার প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স)-র ব্যবহার। মিলিটারি রোবোটিকস এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে ব্যাপকভাবে ওই প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে চীন। এ ছাড়াও চীনের আরও ভয়ঙ্কর অস্ত্র হলো সাইবার হামলা। ইতিমধ্যেই চীনা হ্যাকারদের বিরুদ্ধে বার বার সাইবার হানার অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশ। যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের সরাসরি সংঘাত ঘটলে তাতে বড় ভূমিকা নিতে পারে চীনা হ্যাকাররা।