বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুপিয়ে ও গুলিতে মাছুম মিয়া (২২) নামে যুবক নিহতের ঘটনায় কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক এমপি আ ক ম বাহা উদ্দিন ও ও তার মেয়ে কুমিল্লা সিটি করেপোরেশনের মেয়র ডা. তাহসীন বাহার সূচনাসহ ৬২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
এছাড়াও অজ্ঞাত ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে মামলায়।
নিহত মাছুম একই উপজেলার উত্তর রামপুর এলাকার শাহীন মিয়ার ছেলে এবং স্থানীয় একটি খাবার হোটেলের কর্মচারী ছিলেন।
রবিবার (১৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার দিশাবন্দ গ্রামের তাজুল ইসলামের পুত্র আবদুল হান্নান বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
এসময় নিহত মাছুমের বাবা শাহীন মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে নিরপরাধ, তাকে কেন এভাবে হত্যা করা হলো। তার ছেলের বাম পায়ে দুটি গুলি ও মাথার পেছনে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, ‘এ মামলায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগষ্ট বিকালে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার নন্দনপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলে গুলি ও কুপিয়ে মাছুম নামের এক যুবক হত্যা করা হয়। সাবেক এমপি বাহার ও তার মেয়ে ডা. সূচনাকে (সিটি মেয়র) হামলার নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে। অপর আসামিরা সশস্ত্র হামলায় জড়িত ছিলেন।’
এদিকে মামলার এজাহারে থাকা আসামিরা হচ্ছেন-
কুমিল্লা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, কুমিল্লা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান আহম্মেদ নিয়াজ পাভেল, কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টু, সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান পিয়াস, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হাবিবুর আল আমিন সাদী, ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলর সাইফুল আলম রনি, (জামাই রনি), কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাবেদ, কুমিল্লার বাগিচাগাওয়ের কাউসার জামান কায়েস, তালপুকুর পাড়ের সুজন দত্ত, কালিয়াজুড়ির মুরাদ মিয়া, কাউন্সিলর আজাদ হোসেন, কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, কাউন্সিলর ইকরামুল হক, রেইসকোর্সের আবদুল কাইয়ূম, কাউন্সিলর আবুল হাসান , সাবেক কাউন্সিলর মাসুদুর রহমান মাসুদ, কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক শিহানু, কুমিল্লার মধ্যম আশ্রাফপুরের নাজমুল ইসলাম শাওন, ছাত্রলীগ নেতা সালেহ আহম্মেদ রাসেল, কুমিল্লার অশোকতলার শাহ আলম খান, শাসনগাছার আবু হেনা, সাক্কু, ধর্মপুরের শহীদুল ইসলাম চপল, ফখরুল ইসলাম রুবেল, কাউন্সিলর গাজী গোলাম সরওয়ার শিপন, কুমিল্লার সদর দক্ষিণের শ্রীমন্তপুরের দুলাল হোসেন অপু, নেউয়ারার জাকির হোসেন, পাথুরিয়াপাড়ার প্রিতুল, শাকতলা মীর পুকুর পাড়ের রবিন, কালা মোস্তফা, অশোকতলার সাইফুল ইসলাম খোকন, শ্রীভল্লভপুরের মো. মেহেদী, চেয়ারম্যান হাসান রাফি রাজু, শিমপুরের মনিরুজ্জামান মনির, ব্রাহ্মণপাড়ার ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান শরীফ, শিমপুরের নিতান্ত, শ্রীভল্লবপুরের আবদুল মালেক ভূঞা, মো. খাইরুল হাসান, মো. হানিফ দুলাল, ঢুলিপাড়ার রাশেদুজ্জামান রাশেদ, শাসনগাছার জালাল, দক্ষিণ বিজয়পুরের মো. জাফর আহাম্মদ শিপন, মোস্তফাপুরের মুন্সীবাড়ির মো. হাসান, মনোহরপুরের মোখলেছুর রহমান, বাগিচাগাওয়ের শফিকুর রহমানের ছেলে বাপ্পি, দৌলতপুরের ছায়া বিতানের জালাল (পিচ্চি জালাল), কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সোহেল, দক্ষিণ চর্থার কাউসার আহমেদ খন্দকার ও আকাশ, মুন্সেফবাড়ির ফরহাদ উল্লাহ, লক্ষীনগরের কবির হোসেন, দিশাবন্দের গোলাম মোস্তফা, দুলাল মিয়া, জিয়াউর রহমান, লক্ষীনগরের জালাল, সুজানগর চৌমুহনীর জালাল ও হানিফ।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ
সাইবার আইনের মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে, গ্রেপ্তাররা মুক্তি পাচ্ছেন
সাবেক এমপি সুজনের জামিন না মঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ