জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। উত্তোলনের কোন বৈধতা না থাকার পরে ও নিয়মিত বালু উত্তোলনের ফলে গোটা এলাকা ভাঙ্গনের কবলে পড়বে বলে আশংকা করছেন এলাকাবাসী।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মানিককোনা এলাকায় কোন বালু মহাল নেই। সম্প্রতি বালু উত্তোলন নিয়ে মানিককোনা এলাকায় চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। সম্প্রতি ওই এলাকায় কুশিয়ারা নদীর তীর ভাঙনরোধে ৫০ লাখ টাকার প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব পায় মেসার্স এন আর এন্টারপ্রাইজ, যার সার্বিক তত্বাবধানে রয়েছেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক দিদারুল আলম নিমু। ওই কাজে ২৫০ কেজি ওজনের বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে দিদারুল আলম নিমু জানান, এই কাজে অনেক বালু প্রয়োজন তাই এ বিষয়টি সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। কাজের স্বার্থে বালু উত্তোলন করে মজুদ করা হচ্ছে বিক্রয়ের জন্য নয়। ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কোন বৈধতা নেই এমন কথাও স্বীকার করেছেন যুবলীগ নেতা দিদারুল আলম নিমু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মানিককোনা এলাকার একাধিক ব্যাক্তিরা জানান, ঠিকাদার প্রতিরক্ষা কাজের জন্য বালু কিনে এনে ব্যবহার করবেন এটাই বাস্তবতা, তাই বলে এলাকার ক্ষতি করে নয়। তারা আরো জানান, একদিকে বালু উত্তোলন করে প্রতিরক্ষা করা হচ্ছে আর অপরদিকে বালু মহাল ছাড়া বালু উত্তোলন করায় মানিককোনা এলাকায় বিশাল ভাঙ্গনের সৃষ্টি হবে, এর দায়ভার নেবে কে? সরকারি নিষেধাজ্ঞা দেয়া স্বত্বেও সরকার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক বালু উত্তলন করা হচ্ছে বলেও জানান তারা।
উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবজাল হোসেন জানান, উপজেলা সমন্বয় সভায় বালু উত্তোলনের বিষয়টি অবহিত করায় হয়েছে। পরবর্তীতে উপজেলা ভুমি অফিস থেকে সরেজমিন গিয়ে বালু উত্তোলন না করার জন্য প্রশাসনিকভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। একজন চেয়ারম্যান হিসেবে এলাকার স্বার্থে আমি নিজেও নিষেধ করেছি। এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে এক বিশাল ভাঙ্গনের কবলে পড়বে ওই এলাকার ঘরবাড়ি, জানালেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবজাল হোসেন।
এ বিষয়ে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আমির হোসেন খান জানান, ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হবে সিডিউলে তা উল্লেখ নেই। ড্রেজার দিয়ে নদী খনন বা বালু উত্তোলন তা দেখভালের দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের, এখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন এখতিয়ার নেই। তবে তিনি জেনেছেন ঠিকাদার জেলা প্রশাসনের কাছে বালু উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি