April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, June 22nd, 2022, 12:32 pm

কুড়িগ্রামে বানভাসিদের দুর্ভোগ বেড়েছে, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

কুড়িগ্রামে বন্যা যত স্থায়ী হচ্ছে বানভাসিদের ততই দুর্ভোগ বাড়ছে। বেশিরভাগ পরিবার বাড়ির ভিতর চৌকি উঁচু করে সেখানে অবস্থান করছে। কেউ কেউ নৌকায় গবাদিপশু নিয়ে দিনরাত পার করছে, কখন পানি নেমে যাবে। এই পরিস্থিতিতে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন তারা। সমস্যায় পড়েছেন গবাদিপশুর খাবার নিয়ে।

সদর উপজেলার চর পার্বতীপুর গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, ‘নিজেরা না হয় কোন রকমে চলবের নাগছি কিন্তু গরু-ছাগল নিয়া খুব বিপদে আছি। খড়ের গাদা পানিতে ভিজি গেইছে। এখন কি দেই আর কি খাওয়াই। খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত ১ লাখ ৪১ হাজার ৬১২জন মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। নাগেশ্বরী উপজেলায় ৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৬০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বন্যায় ৩২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হওয়ায় পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। বানভাসি মানুষের কথা চিন্তা করে ৩৬১টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানা গেছে। অনেক পানিবন্দি এলাকায় সরকারি বা বেসরকারিভাবে কেউ খোঁজ নিতেও আসেনি বলে বানভাসিরা অভিযোগ তুলেছে।

সদর উপজেলার ভগবতীপুর চরের জোহরা খাতুন জানান, চুলা জ্বালাতে পারছি না। ঘরেও সবকিছু তলিয়ে গেছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি।

উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা আমির হোসেন জানান, বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে থাকায় নিজেরা তো কষ্টে আছি। এ অবস্থায় গরু ছাগলের খাবারও জোগাড় করতে পারছি না।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, আমার ইউনিয়নে ১৪শ’ পরিবার প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে আরও ৩ হাজার ৫শ’ পরিবার।

ঘোগাদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক সরকার জানান, তার ইউনিয়নে ৭৫০টি পরিবার প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে ৪ হাজার পরিবার।

ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ৫ হাজার ৮৪১টি পরিবার পানিবন্দি হলেও ত্রাণ পেয়েছে ৭শ’ পরিবার বলে জানান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন জানান, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপর কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। বন্যার পানি ধীর গতিতে কমতে শুরু করেছে।

বুধবার সকালে ব্রহ্মপূত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়ায় ১৯ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৪১ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে তিনি জানান।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ৯ উপজেলার বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ৩৩৮ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা গো-খাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

—ইউএনবি